ব্যাকলিংক তৈরি করার উপায় – বিস্তারিত গাইডলাইন

ওয়েবসাইট বা ব্লগ তৈরির পর গুগলে সেটা সাবমিট করে এবং এসইও ফ্রেন্ডলি কনটেন্ট তৈরি করেই কি আপনি নিশ্চিন্ত অনুভব করেন? তবে আপনার জন্য দুঃসংবাদ! সফলতার সঠিক পথ থেকে আপনি বেশ অনেকটাই পিছিয়ে আছেন। কারণ অনপেজ এসইও ঠিকঠাক মতো সম্পন্ন করে নিলেও “অফ-পেজ এসইও, ব্যাকলিংক তথা লিংক বিল্ডিং কি ও কেন প্রয়োজন এবং সঠিকভাবে ব্যাকলিংক তৈরি করার উপায়” – এই বিষয়টি সম্পর্কে আপনার ধারণা বেশ খানিকটা ধোঁয়াটে।

অন-পেজ এসইও এবং অফ-পেজ এসইও সম্পর্কিত প্রাথমিক ধারণা

এসইও কে মূলত দুই ভাগে ভাগ করা হয়ে থাকে। সেগুলোর একটি অন-পেজ এসইও এবং অন্যটি অফ-পেজ এসইও। কোনো ওয়েবসাইটের অভ্যন্তরীণ সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন ভিত্তিক কাজগুলোকে অন-পেজ এসইও এবং ওয়েবসাইটের বাইরের এসইও ভিত্তিক কাজগুলোকে বলা হয় অফ-পেজ এসইও।

একটি ওয়েবসাইটের অন-পেজ এসইও সবচেয়ে বেশি প্রয়োজনীয় হলেও অফ-পেজ এসইও এর গুরুত্বও মোটেও কম নয়। সার্চ ইঞ্জিনগুলো কোনো কনটেন্টের র‍্যাংকিং শুধুমাত্র অন-পেজ এসইও নয়, পাশাপাশি অফ-পেজ এসইও এর উপর নির্ভর করেও তৈরি করে থাকে। এক্ষেত্রে ব্যাকলিংক খুব বেশি কার্যকরী ভূমিকা পালন করে।

এই লেখাতে অফ-পেজ এসইও এর একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ; সঠিকভাবে ব্যাকলিংক তৈরি করার উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। আশা করি এ সম্পর্কে নূন্যতম জ্ঞান না থাকা সত্ত্বেও আপনি পুরো লেখাটি পড়ে ফেলার পর উপকৃত বোধ করবেন এবং আপনার ব্যাকলিংক তৈরি করার পদ্ধতি সম্পর্কে ধারণা স্পষ্টতর হবে।

প্রাসঙ্গিক লেখাটি পড়ে দেখতে পারেন-

অফ-পেজ এসইও কি?

মনে করুন, আপনি একটি সুন্দর রেস্টুরেন্ট তৈরি করলেন। রেস্টুরেন্টটি নিয়ে গভীর স্বপ্ন আপনার। আপনি বিশ্বাস করেন, একদিন এই রেস্টুরেন্টটা হবে অনেক নামী। বিভিন্ন স্থান থেকে মানুষ এখানে আসবে ভোজন করতে।

আপনি এটাও জানেন, শুধু স্বপ্ন দেখলেই হয় না। স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করতে প্রয়োজন সে অনুযায়ী পরিকল্পনা ও পরিশ্রমের। এজন্য রেস্টুরেন্টের ভেতরটা সুন্দর করে সাঁজালেন। বাইরেও দিলেন ভীষণ রকম আলোকসজ্জ্বা। শুধু তাই নয়, রেস্টুরেন্টে ‘ফুড ইজ কিং’ কথাটির তাৎপর্য অনুধাবন করে, ভালো মানের খাবারও নিশ্চিত করলেন।

কিন্তু এতো কিছুর পরও আপনার রেস্টুরেন্টে তেমন কোনো ভোজন রসিক এলো না। মাছি তাড়াতে তাড়াতে আপনার মনে পড়ল, আপনি তো পোস্টারিং করতেই ভুলে গেছেন! সাথে সাথে বেরিয়ে গেলেন রেস্টুরেন্টের বাইরে।

বিভিন্ন জায়গায় আপনার রেস্টুরেন্টের নাম লাগিয়ে দিলেন। শুধু তাই নয়, লোকাল বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মালিককে মানুষদের কাছে আপনার রেস্টুরেন্টকে প্রোমোট করার জন্য অনুরোধ করলেন।

এবার আপনার রেস্টুরেন্টে ভিজিটর এলো। তারা ভেতরের সৌন্দর্য দেখে খুশি হলো। ভালো খাবার খেয়ে আপ্লুত হলো।

এখন আসি আসল কথায়। এই রেস্টুরেন্ট আর আপনার ওয়েবসাইটের মাঝে বিশেষ কোনো পার্থক্য নেই। আপনি রেস্টুরেন্টের ভেতরের সৌন্দর্যকে বাড়িয়ে এবং ভালো খাবার নিশ্চিত করে এতোদিন যাবৎ যে কাজটা করেছেন, সেটাই অন-পেজ এসইও বা ওয়েবসাইটের ভেতরে করা এসইও।

পড়ে দেখতে পারেন-

নতুন ব্লগারদের করা সবচেয়ে বড় কিছু ভুল।

এরপর রেস্টুরেন্টের বাইরে বেরিয়ে পোস্টারিং ও রেফারিং এর মাধ্যমে যে কাজটা করলেন, সেটাই অফ পেজ এসইও বা ওয়েবসাইটের বাইরে করা এসইও।

রেস্টুরেন্টের মতো ওয়েবসাইট বা ব্লগের তো ঐরকমভাবে পোস্টারিং এর সুযোগ থাকে না। ওয়েবসাইটের পোস্টারিং করতে হয় ব্যাকলিংকের মাধ্যমে।

অফ-পেজ এসইও’র জন্য ব্যাকলিংক এর প্রয়োজন কি?

ব্যাকলিংক কে অফ-পেজ এসইও এর প্রাণ বলা হয়ে থাকে। অফপেজ এসইও মানেই ব্যাকলিংকের সঠিক প্রয়োগ।

ব্যাকলিংক হলো অন্য ওয়েবসাইটে গিয়ে সেখানে নিজের ওয়েবসাইটের প্রচার করার লিংক। অর্থাৎ নিজের ওয়েবসাইটের বাইরে গিয়ে গুগলে ভালো পজিশনে থাকা অন্য ওয়েবসাইটগুলোতে যেকোনোভাবে নিজের ওয়েবসাইটের লিংক ঢুকিয়ে দেয়া।

আপনি নিজেও বিভিন্ন ওয়েবসাইটে আর্টিকেল লিখে, লিখার শেষে আপনার ওয়েবসাইটের লিংক ঢুকিয়ে ব্যাকলিংক তৈরি করতে পারেন। এছাড়াও আপনার ওয়েবসাইটে ভালো কনটেন্ট আছে মনে করে বিভিন্ন ওয়েবসাইটের মালিক যদি তাদের কনটেন্টে ভিজিটরদের উপকারের কথা চিন্তা করে আপনার ওয়েবসাইটের লিংক ঢুকিয়ে দেয়, তবে সেটাও ব্যাকলিংক।

মানে, ব্যাকলিংক অনেকটা রাস্তায় ঝুলিয়ে রাখা আপনার রেস্টুরেন্টের পোস্টারের মতো। এছাড়াও, আপনার রেস্টুরেন্টে খেয়ে সন্তুষ্ট ব্যক্তি অন্য কারো কাছে যখন আপনার রেস্টুরেন্টের প্রশংসা করে, তখন সেটাও কিন্তু একটা ব্যাকলিংক।

তবে এক্ষেত্রে লক্ষ্য করুন, রাস্তার পাশে ঝুলিয়ে রাখা পোস্টার আপনি নিজে তৈরি করেছেন। অর্থাৎ আপনি নিজেই নিজের প্রতিষ্ঠানের প্রশংসা করছেন, যাকে বলে, নিজের ঢোল নিজেই পেটানো।

অন্যদিকে আপনার রেস্টুরেন্টে খেয়ে সন্তুষ্ট হওয়া ব্যক্তি যখন অন্যদের কাছে আপনার প্রতিষ্ঠানের প্রশংসা করছে, সেটা নিঃস্বার্থ প্রশংসা।

আপনি নিশ্চয়ই জানেন, নিঃস্বার্থ প্রশংসার দাম বেশি! একইভাবে, অবশ্যই নিজের তৈরি করা ব্যাকলিংক অপেক্ষা আপনার ওয়েবসাইটের জন্য অন্যদের তৈরি করা ব্যাকলিংক বেশি ফলদায়ক।

কিন্তু নতুন অবস্থাতে কেউ আপনার ওয়েবসাইটের জন্য নিজের ভিজিটরদের রেফার করবে না। তাই নিজেকেই ব্যাকলিংক তৈরি করতে হবে।

ব্যাকলিংক তৈরি করার প্রধান কারণগুলোর আরেকটি হলো গুগলের কাছে বিশ্বস্ত হিসেবে নিজের ওয়েবসাইটকে পরিচয় করিয়ে দেয়া। নতুন অবস্থায় গুগল আপনার ব্লগকে সেভাবে চিনবে না। তাই বিশ্বস্তও ভাববে না। অথচ গুগলের অ্যালগরিদম অনুযায়ী বিশ্বস্ত ওয়েবসাইটগুলোকে গুগল সবচেয়ে বেশি প্রাধান্য দিয়ে থাকে।

তাহলে গুগলের কাছে বিশ্বস্ত হবেন কিভাবে? উত্তর হলো ব্যাকলিংক!

গুগল একটি ওয়েবসাইটকে তখনই বিশ্বস্ত ভাবে, যখন বিভিন্ন ভালো ওয়েবসাইটকে সেই ওয়েবসাইটের বিষয়ে রেফারিং করতে দেখে৷ আর রেফারিং করার কাজটাই হলো ব্যাকলিংক তৈরি করা।

অফ-পেজ এসইও করার কার্যকরি কিছু উপায়

বিভিন্ন ওয়েবসাইটে গেস্ট পোস্ট করার মাধ্যমে

অনেক ব্লগারই একা একা নিজের ওয়েবসাইটের জন্য কন্টেন্ট প্রস্তুত করতে গিয়ে রীতিমতো হিমশিম খেয়ে যান। এজন্য তারা তাদের ওয়েবসাইটে গেস্টপোস্টিং এর সুযোগ তৈরি করে দিতে চান।

অন্যের ওয়েবসাইটে গেস্ট পোস্টিং করে যে কেউ খুব ভালো পরিমাণ ব্যাকলিংক তৈরি করে নিতে পারে। শুধু ব্যাকলিংকই নয়, নিজের ওয়েবসাইটে সরাসরি ভিজিটর আনতেও এ পদ্ধতি বেশ কার্যকরী।

ব্যাকলিংক পাওয়ার উদ্দেশ্যে গেস্ট পোস্টিং করতে চাইলে অবশ্যই গুগলে ভালো পজিশনে থাকা ওয়েবসাইটগুলোর দিকে টার্গেট রাখতে হবে। কারণ কোনো ওয়েবসাইটের র‍্যাংকিং যত বেশি হবে, আপনার তৈরী করা লিংকের কার্যকরীতাও তত ভালো হবে।

একটা কথা বলে নেওয়া ভালো, গেস্ট পোস্টে নিজস্ব ওয়েবসাইটের হোমপেইজের লিংক না দিয়ে কনটেন্টের লিংক দিলে বেশি ভালো ফলাফল পাওয়া যায়।

আপনার ওয়েবসাইটটি যদি ইংরেজি ভাষায় তৈরীকৃত হয়, তবে Airy Passion .Com এ গেস্ট পোস্টিং করে আপনি বেশ ভালো মানের ব্যাকলিংক তৈরি করে নিতে পারেন।

সোশ্যাল মিডিয়ায় লিংক শেয়ার করে ব্যাকলিংক তৈরি করার উপায়

সোশ্যাল মিডিয়ায় লিংক শেয়ার করে অফ-পেজ এসইও এর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পাঠ চুকানো যায়। বেশিরভাগ সফল ব্লগারের অফ-পেজ এসইও এর ক্ষেত্রে অন্যতম পছন্দের জায়গাটি হচ্ছে সোশ্যাল মিডিয়া।

অন্য ওয়েবসাইটে গিয়ে গেস্ট পোস্টিং করার ক্ষেত্রে আপনাকে কপিরাইট পলিসির খাতিরে নতুন একটি আর্টিকেল লিখতে হবে। শুধু নতুন আর্টিকেল হলেই তো চলবে না, এ্যাপ্রুভাল পাওয়ার জন্য লেখার মানও হতে হবে অনেক উন্নত। ফলে বিষয়টা অনেক সময়সাপেক্ষ হয়ে দাঁড়াবে।

অথচ সোশ্যাল মিডিয়ায় লিংক শেয়ার করতে এরকম কোনো জটিলতার গন্ধটুকুও পাওয়া যায় না। নিজের আইডি দিয়ে যা খুশি করতে পারার সুযোগ থাকায় ইচ্ছেমতো লিংক শেয়ার করা যায়। আর সবচেয়ে বড় ব্যাপার হলো, আমাদের দৈনন্দিন ব্যবহৃত সোশ্যাল মিডিয়া সাইটগুলো যথেষ্ট সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজড এবং সার্চ ইঞ্জিনে ভালো পজিশন দখল করে থাকা।

একবার ভেবে দেখুন, আপনি যদি আপনার একটি আর্টিকেলের লিংক ১০ টা সোশ্যাল মিডিয়া সাইটে পোস্ট করেন, তবে আপনার ১০টি ব্যাকলিংক তৈরী হয়ে যাচ্ছে৷ আর যদি ১০ টি আর্টিকেলের লিংক এই ১০ টা সোশ্যাল মিডিয়া সাইটে পোস্ট করেন, তবে আপনার ওয়েবসাইটের জন্য তৈরি হয়ে যাচ্ছে ১০০ টি ব্যাকলিংক!

লিংক বিল্ডিং এর ক্ষেত্রে সোশ্যাল মিডিয়া সাইটগুলোর মাঝে ফেসবুক ও টুইটার সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয়। এছাড়া লিংকডইনও যথেষ্ট সম্মানজনক অবস্থানে রয়েছে।

পড়ুন-

ফেসবুক মার্কেটিং করে সফল হবার কিছু টিপস

আপনি যদি সোশ্যাল মিডিয়া সাইটগুলো সম্পর্কে তেমন পারদর্শী না হয়ে থাকেন, তবে আমার পরামর্শ হলো– ফেসবুকের পেজ খোলার মাধ্যমে সোশ্যাল মিডিয়ায় লিংক বিল্ডিং শুরু করুন। কারণ ফেসবুকের সিস্টেম অপেক্ষাকৃত সহজ, জটিলতামুক্ত এবং বেশি এসইও ফ্রেন্ডলি।

কিভাবে লিংক বিল্ডিং করা যায়?

আপনার মনে প্রশ্ন আসতে পারে, কিভাবে লিংক বিল্ড করা যায়? শুধুই লিংক দিয়ে রাখব কিনা, নাকি পুরো আর্টিকেলটাই কপি পেস্ট করে দেব?

উত্তর হলো, দুটোর একটাও নয়। শুধু লিংক দিয়ে রাখলে বেখাপ্পা লাগবে। তাই শুধু লিংক দিতে যাবেন না। লিংকের সাথে ওই আর্টিকেল সম্পর্কে কিছু কথা যোগ করে দিবেন।

আর আপনি যদি আমার মতো আলসে হয়ে থাকেন, তবে আর্টিকেলের প্রথম প্যারাটুকু লিংকের ওপরে বসিয়ে ডট ডট চিহ্ন (…..) লাগিয়ে পোস্ট করে দিন। তাহলেই হবে।

সোশ্যাল মিডিয়া সাইটগুলোতে আর্টিকেলের লিংক পোস্ট করলে অফ-পেজ এসইও এর পাশাপাশি বিপুল সংখ্যক ভিজিটরও পাওয়া যায়। তবে সেজন্য আর্টিকেলটির ফিচার্ড ইমেজ ও টাইটেলটা লোভনীয় হওয়া বাঞ্চনীয়। কিন্তু এক্ষেত্রে কোনো অবস্থাতেই বিষয়ের সাথে অসামঞ্জস্যপূর্ণ টাইটেল বা ফিচার্ড ইমেজ ব্যবহার করা যাবে না।

প্রশ্নোত্তর ওয়েবসাইটের মাধ্যমে ব্যাকলিংক তৈরি করার উপায়

প্রশ্নোত্তর ওয়েবসাইটগুলো অনেকটা সোশ্যাল মিডিয়া ওয়েবসাইটগুলোর মতোই। সোশ্যাল মিডিয়া সাইটে যেমন মানুষ নিজেদের কথা লেখে। প্রশ্নোত্তর ওয়েবসাইটগুলোতে তেমনই মানুষ নিজেদের মনের প্রশ্নগুলো লেখে।

প্রশ্ন-উত্তর সাইটগুলো ব্যবহার করে ব্যাকলিংক তৈরির মাধ্যমে অফ-পেজ এসইও বেশ ভালোভাবেই করা সম্ভব হয়। ব্যাকলিংক তৈরির এটা মোটামুটি সহজ একটা মাধ্যম বটে।

প্রশ্ন-উত্তর সাইটগুলোতে মানুষ প্রয়োজন অনুযায়ী বিভিন্ন রকম প্রশ্ন করে৷ আর অন্যরা সেটার উত্তর দেয়।

নিজের একটা ব্লগ থাকলে, আপনি নিশ্চয়ই জানেন, ব্লগে প্রকাশ করা একেকটি আর্টিকেলে অনেকগুলো প্রশ্নের উত্তর থাকে। প্রশ্ন-উত্তর সাইটগুলোতে যদি এমন কোনো প্রশ্ন চোখে পড়ে, যেটার উত্তর আপনার ব্লগের কোনো আর্টিকেলে বিদ্যমান আছে, তবে সুন্দর করে অল্প ভাষায় ঐ প্রশ্নের উত্তর লিখে বিস্তারিত জানার জন্য আপনার ব্লগের সামঞ্জস্যপূর্ণ কোনো আর্টিকেলের লিংক বসিয়ে দিন।

এছাড়াও, মনের মতো করে উত্তর লিখে ফুটনোট হিসেবে আপনার ওয়েবসাইটের সামঞ্জস্যপূর্ণ কোনো আর্টিকেলের লিংক ব্যবহার করতে পারেন।

আপনার ব্লগের ভাষা ইংরেজি হয়ে থাকলে ইন্টারনেটে আপনার সাইটের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ বিষয়ে আলোচনা হয় এমন প্রশ্ন-উত্তর ওয়েবসাইটের অভাব হবে না।

আর যদি ভাষা হয়ে থাকে বাংলা, তবে বেশতো, কোরা এবং বিষ্ময় ওয়েবসাইট তিনটি ব্যবহার করুন। এই তিনটির মাঝে কোরা আমার প্রথম পছন্দ। কোরার বাংলা ভার্সনের পাশাপাশি আরো বিভিন্ন ভাষার ভার্সন থাকার কারণে এটার ব্র্যান্ড ভ্যালু বেশ ভালো এবং ভিজিটরও অনেক বেশি।

এখানে একেকটি বাংলা প্রশ্নের উত্তর গড়ে প্রায় ১ থেকে ৫ হাজারের মতো মানুষ দেখে থাকে। তাই লিংক শেয়ার করলে প্রচুর ভিজিটর পাওয়ার সম্ভাবনাও যথেষ্ট বেশি।

ফোরাম পোস্টিং করে ব্যাকলিংক বিল্ডিং

ফোরাম পোস্টিং ব্যাকলিংক তৈরির গুরুত্বপূর্ণ একটি কৌশল। আর ব্যাকলিংক তৈরি অফ-পেজ এসইও এর মূল ভিত্তি। ফোরাম পোস্টিং করে প্রচুর পরিমাণে ব্যাকলিংক তৈরি করা যায়।

তবে সব ধরণের ফোরামে ব্যাকলিংক তৈরি করা ফলদায়ক নাও হতে পারে। কোনো ফোরামে সিরিয়াসলি ব্যাকলিংক তৈরির কাজ শুরু করার আগে জেনে নিন, ঐ ফোরামে প্রকাশিত লিংকগুলো অটো ‘nofollow’ করা থাকে কিনা। অটো ‘nofollow’ করা থাকলে ব্যাকলিংক তৈরি করে অফ-পেজ এসইও এর কোনো কাজই হবে না। কারণ সার্চ ইঞ্জিনগুলো আপনার তৈরি করা লিংকটি অনুসরণই করবে না।

তবে যদি কোনো ফোরামে প্রকাশিত লিংক অটো ‘nofollow’ করা না থাকে, তবে চোখ কান বন্ধ করে লিংক বিল্ড করা শুরু করুন। এটা আপনার ওয়েবসাইটের অফ-পেজ এসইও এর কাজ নিঃসন্দেহে অনেকখানি এগিয়ে দেবে। কিন্তু কোনো অবস্থাতেই অপ্রাসঙ্গিক আর্টিকেলের লিংক দেবেন না।

মোবাইল কেনা বিষয়ক ওয়েবসাইটের ফোরামে যদি রুপচর্চা বিষয়ক আর্টিকেলের লিংক দিয়ে ভরিয়ে দেন, ওয়েবসাইটের এ্যাডমিন কিন্তু আপনাকে ব্যান করে দেয়ার পাশাপাশি আপনার লিংকটাকে স্প্যামিং এর খাতায় জুড়ে দিতেও ভুল করবে না।

ডিরেক্টরী সাবমিশন ওয়েবসাইট এর মাধ্যমে ব্যাকলিংক তৈরি করার উপায়

ভালো মানের ব্যাকলিংক তৈরির জন্য, ডিরেক্টরী সাবমিশন ওয়েবসাইটগুলো ব্যবহার করতে পারেন। এগুলোর মাধ্যমে খুব সহজেই ব্যাকলিংক তৈরি করা যায়।

ডিরেক্টরী সাবমিশন সাইটগুলোতে ব্যাকলিংক তৈরি করার জন্য খুব সামান্য কিছু কাজ করতে হয়। এজন্য প্রথমেই একটি ডিরেক্টরী সাবমিশন ওয়েবসাইটে রেজিস্টেশন করতে হবে। তারপর, বিভিন্ন ক্যাটাগরীর মধ্যে আপনার ব্লগের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ একটি ক্যাটাগরি বাছাই করে নিয়ে নিজের ওয়েবসাইটের লিংক যুক্ত দিতে হবে।

ডিরেক্টরী সাবমিশনের মাধ্যমে ব্যাকলিংক তৈরি করলে ভালো ফলাফল পেতে একটু সময় লাগতে পারে৷ কিন্তু এটা বেশ কার্যকরী প্রক্রিয়া।

এই পদ্ধতিতে যেহেতু কাজ খুব কম, তাই এই ধরণের যেকোনো একটি ওয়েবসাইটে লিংক যুক্ত না করে এই রকম বিভিন্ন ওয়েবসাইটে লিংক জুড়ে দিন। গুগলে সার্চ করলেই কয়েকশো ডিরেক্টরী সাবমিশন ওয়েবসাইট পেয়ে যাবেন। ভালো রাংকিং এ থাকা ওয়েবসাইটগুলোতে আপনার লিংকের উপস্থিতি নিশ্চিত করুন।

এখানে গুগল থেকে পাওয়া কিছু উচ্চ DA/PA directory submission websites এর নাম দেয়া হলোঃ

https://10directory.com/
https://www.thewebdirectory.org/
https://www.blogadda.com/
https://www.siteswebdirectory.com/

ইউটিউবের মাধ্যমে ব্যাকলিংক তৈরি করার পদ্ধতি

ইউটিউব বর্তমানে বহুল জনপ্রিয় ভিডিও শেয়ারিং প্লার্টফর্ম। ইউটিউব ব্যবহারকারীর সংখ্যা যে হারে উর্ধ্বগামী, তাতে সহজেই অনুমাণ করা যায়, ভবিষ্যতের কত বড় একটা সম্ভাবনার নাম এটি। ইউটিউবের DA/PA মানও কিন্তু অনেক বেশি। তাই ইউটিউবে নিজের ব্লগের লিংক ঢুকিয়ে দিলে ভালো ফলাফল পাওয়া যায়।

আজকাল সবাই ব্র্যান্ডিং পছন্দ করে। প্রচুর ব্লগারকে দেখেছি ব্লগিং এর পাশাপাশি একই নামে ইউটিউবে চ্যানেল খুলে ফেলতে। তারা কি করে জানেন? কিছুই না। ব্লগে কোনো আর্টিকেল প্রকাশ করলে সেটা জাস্ট সুন্দর করে রিডিং পড়ে এবং সেই রিডিং পড়া রেকর্ড করে সুন্দর সুন্দর প্রাসঙ্গিক ছবির সাথে যুক্ত করে ইউটিউবে ছেড়ে দেয়।

আমি প্রথম প্রথম এতে বেশ অবাক হতাম। পরে বুঝলাম আসল ব্যাপারটা কি। তাদের উদ্দেশ্য আসলে ইউটিউবে র‍্যাংক করা নয়। তাদের উদ্দেশ্য মূলত ডেস্ক্রিপশন বক্সে নিজের ব্লগের বিষয়ভিত্তিক আর্টিকলের লিংক ঢোকানো। এর কারণ একটাই, সার্চ ইঞ্জিনগুলোর কাছে ইউটিউবে থাকা লিংকের কদর অন্য বেশিরভাগ জনপ্রিয় ওয়েবসাইটের তুলনার অনেক অনেক বেশি।

পরিশেষে

অন-পেজ এসইও এর শেষ থাকলেও অফ-পেজ এসইও এর কোনো শেষ নাই। তবে এ কথা নির্দ্বিধায় বলা যায় যে, অফ-পেজ এসইও এর মূল ভিত্তি হলো ব্যাকলিংক।

যত বেশি ব্যাকলিংক তৈরি করতে পারবেন, ততই সাফল্যের দ্বারপ্রান্তের দিকে এগিয়ে যেতে পারবেন। তবে অফ পেজ এসইও সঠিকভাবে সম্পন্ন না করে, কনটেন্টের ভালো মান নিশ্চিত না করে অফ-পেজ এসইও এর জন্য মরিয়া হওয়া নিছক বোকামী।

অফ-পেজ এসইও যতই ভালো করুন না কেন, কনটেন্ট ও অন-পেজ এসইও ভালো না হলে অফ-পেজ এসইও ও ব্যাকলিংক তৈরি করার উপায় বা পদ্ধতি প্রয়োগ করার জন্য মূল্যবান সময় ব্যয় করার কোনো দামই থাকবে না।

1 thought on “ব্যাকলিংক তৈরি করার উপায় – বিস্তারিত গাইডলাইন”

Leave a Comment