ভিডিও গেমস হচ্ছে এক ধরনের ইলেকট্রনিক গেমস যা ব্যবহারকারীর সাথে ভিডিও ডিভাইজে পারস্পরিক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে। জনপ্রিয় ভিডিও গেমস সমূহ আজকাল তাদের জনপ্রিয়তার জন্যে সময়ের সাথে পাল্লা দিয়ে তৈরি হওয়া ডিস্প্লে ডিভাইজ সমূহে ব্যবহৃত হচ্ছে। ভিডিও গেমস খেলার জন্য যে সকল ইলেকট্রনিক সিস্টেম ব্যবহৃত হয় তাকে বলা হয় প্লাটফর্ম।
যেমন- পার্সোনাল কম্পিউটার এবং ভিডিও গেম কনসোল। তাছাড়া ভিডিও গেমস ব্যবহৃত হয় বিভিন্ন ইনপুট ডিভাইসেও। যেমন পি.এস.পিতে খেলার জন্য ব্যবহৃত গেম কন্ট্রোলার, জয়স্টিক। কম্পিউটারে খেলার জন্য কী-বোর্ড ও মাউস ব্যবহৃত হয়।
ভিডিও গেমসের ইতিহাস
ভিডিও গেমের ইতিহাস জানার জন্য ফিরে যেতে হবে ১৯৪০-এর দশকে। যখন থমাস টি. গোল্ডস্মিথ জুনি. এবং এস্টেল রে ম্যানন কর্তৃক যুক্তরাষ্ট্রের প্যাটেন্ট প্রদানকারী সংস্থা বরাবর আবেদন করে একটি আবিস্কারের জন্য, যা তারা বর্ণনা করে ”বিনোদনমূলক ক্যাথোড রে টিউব ডিভাইস”।
কিন্তু ভিডিও গেমস সত্তুর-আশির দশকের পূর্ব পর্যন্ত জনপ্রিয়তা পায়নি। যতদিন না পর্যন্ত সাধারণ মানুষ ‘আর্কেড গেম্স’, কনসোল গেম্স, হোম কম্পিউটার গেমস্ এর সাথে পরিচিত হয়। সেই থেকে এখন পর্যন্ত, ভিডিও গেম বিনোদনের জন্য একটি জনপ্রিয় মাধ্যম এবং আধুনিক সংস্কৃতির অঙ্গ। ২০১৩ পর্যন্ত আট প্রজন্মের ভিডিও গেম কনসোল রয়েছে।
কম্পিউটার গেমস
যেসব গেমস সাধারণত কম্পিউটারে খেলা হয়ে থাকে তাকে কম্পিউটার গেমস বলে। বর্তমানে ডেস্কটপ কম্পিউটারে গেমস খেলা বেশি জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। সাধারণত গেম সফটওয়্যার হিসেবে থাকে। এটি ইন্টারনেট থেকে ডাউনলোড করে অথবা কিনে খেলা যায়। এছাড়াও গেমসের বিভিন্ন সিডি বা ডিস্ক পাওয়া যায় এবং অনলাইনেও বিভিন্ন জনপ্রিয় ভিডিও গেমস সমূহের অনলাইন সংস্করণ পাওয়া যায়।
মোবাইল গেমস
যে সমস্ত গেম মোবাইল এ খেলা হয়ে থাকে তাকে মোবাইল গেম বলে। বিংশ শতাব্দীর শেষের দিকে এ জাতীয় গেমের উদ্ভব ঘটে। সর্বপ্রথম আবিষ্কৃত মোবাইল গেম ছিল Tetris যা Hagenuk MT-2000 ফোনে ১৯৯৪ সালে প্রথম পাওয়া যায়। এরপর নোকিয়া তাদের Nokia 6610 ফোনে Snake গেমটি যুক্ত করে; যা পরবর্তীতে অনেক জনপ্রিয়তা লাভ করে।
স্মার্টফোনের আবিষ্কারের পর মোবাইল গেমের জনপ্রিয়তা বহুগুনে বেড়ে যায়। বর্তমানে এটি সবচেয়ে জনপ্রিয় ভিডিও গেমস প্লাটফর্ম। বর্তমান সময়ে মোবাইলে জন্য পাওয়া যায় এমন কিছু জনপ্রিয় ভিডিও গেমস হলঃ Clash Of Clans, Clash Royale, PUBG MOBILE, FreeFire, Among Us ইত্যাদি। এগুলোর মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় “PUBG” ও “FreeFire”।
জনপ্রিয় ভিডিও গেমস সমূহের সংক্ষিপ্ত বর্ণনা
PUBG
PUBG গেম হলো গোটা বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় ভিডিও গেমস। বিশেষ করে এশিয়া মহাদেশে জনপ্রিয় এই গেমস। এছাড়া ইউরোপ ও উত্তর আমেরিকা ও এই গেম খুব জনপ্রিয়।
PUBG গেম এর ফুল ফর্ম হলো – Playerunknown’s Battlegrounds (PUBG)
পাবজির ইতিহাস
এই গেমটির ধারণা আসে কিমজি ফুকাসাকু পরিচালিত ব্যাটেল রয়্যাল নামক জাপানী একটি চলচ্চিত্র থেকে, যেটা প্রচারিত হয় ২০০০ সালে। এর কাহিনী বেশ আলাদা। এখানে ৯ম এবং ১০ম শ্রেণীর ছাত্র-ছাত্রীদের একটি অজানা দ্বীপে নিয়ে যাওয়া হয় কিছু খাবার, পানি এবং অস্ত্রসহ। আর তাদের গলায় একটি ব্যান্ড বেঁধে দেয়া হয়, কেউ যদি পালানোর চেষ্টা করে তাহলে সেই ব্যান্ড ফেটে সে মরে যাবে।
আর দ্বীপটি থেকে সে-ই ফিরে যেতে পারবে, যে কি না সবাইকে হত্যা করে একা ঐ দ্বীপে বেঁচে থাকতে পারবে। এই গেমটি এখন ছোট থেকে বড় সবাই খেলে। আর এই গেমটি ই-স্পোর্টস দুনিয়ায় খুব ভালোভাবেই আলোড়ন সৃষ্টি করতে পেরেছে। এখন প্রত্যেক বছরই গ্লোবাল চ্যাম্পিয়নশিপ থেকে শুরু করে সব ধরনের চ্যাম্পিয়নশিপ হয়ে থাকে এই গেমটির।
Free Fire
ফ্রি ফায়ার গেমটি ফ্রি ফায়ার ব্যাটলগ্রাউন্ডস বা গেরিলা ফ্রি ফায়ার নামেও পরিচিত। এটি একটি ব্যাটল রয়্যাল গেম যা ১১১ ডটস স্টুডিও দ্বারা বিকাশিত এবং অ্যান্ড্রয়েড এবং আইওএসের জন্য গেরিনা দ্বারা প্রকাশিত হয়েছে।
২০১৯ সালে এটি বিশ্বব্যাপী সর্বাধিক ডাউনলোড করা মোবাইল গেম হয়ে উঠেছে। জনপ্রিয়তার কারণে, গেমটি ২০১৯ সালে গুগল প্লে স্টোর দ্বারা “সেরা জনপ্রিয় ভোট গেম” এর জন্য পুরস্কার পেয়েছিল।
২০২০ সালের মে পর্যন্ত, ফ্রি ফায়ার বিশ্বব্যাপী দৈনিক ৮০ মিলিয়নেরও বেশি সক্রিয় ব্যবহারকারীদের সাথে একটি রেকর্ড তৈরি করেছে।
নভেম্বর ২০১৯ পর্যন্ত, ফ্রি ফায়ার বিশ্বজুড়ে বিশ্বব্যাপী ১ বিলিয়ন ডলার আয় করেছে।
আরও পড়ুন-
গেরিনা ফ্রি ফায়ার
গেরিনা ফ্রি ফায়ার একটি অনলাইন অ্যাকশন-অ্যাডভল রয়্যাল গেম যা তৃতীয় ব্যক্তির দৃষ্টিকোণে খেলা হয়। গেমটি অন্যান্য খেলোয়াড়কে হত্যা করার জন্য অস্ত্র এবং সরঞ্জামের সন্ধানে একটি দ্বীপে প্যারাসুট থেকে পড়ে আসা ৫০ জন ও তার অধিক খেলোয়াড়কে অন্তর্ভুক্ত করে।
খেলোয়াড়গণ তাদের যুদ্ধের জীবন বাড়ানোর জন্য তাদের শুরুর অবস্থান চয়ন করতে, অস্ত্র এবং সরবরাহ নিতে মুক্ত। খেলোয়াড়রা যখন কোনও খেলায় যোগ দেয়, তখন তারা একটি বিমানে প্রবেশ করবে, যা দ্বীপের উপর দিয়ে উড়ে যাবে।
বিমানটি দ্বীপের উপর দিয়ে উড়ে যাওয়ার সময় খেলোয়াড়রা যেখানে খুশি সেখানে ঝাঁপিয়ে পড়তে পারে, ফলে শত্রুদের হাত থেকে দূরে অবতরণের জন্য কৌশলগত স্থান বেছে নিতে পারে।
অবতরণের পরে, খেলোয়াড়দের অবশ্যই অস্ত্র এবং ইউটিলিটি আইটেমগুলির সন্ধান করতে হবে। চিকিৎসা সরঞ্জাম, মাঝারি এবং বড় অস্ত্র, গ্রেনেড, গ্লু ওয়াল বা আঠার দেয়াল এবং অন্যান্য আইটেমগুলি পুরো দ্বীপ জুড়ে পাওয়া যাবে।
খেলোয়াড়দের চূড়ান্ত লক্ষ্য সর্বাধিক ৫০-৫১ জন খেলোয়াড় সাথে দ্বীপে বেঁচে থাকা; এর জন্য খেলোয়াড়ের মুখোমুখি সমস্ত প্রতিপক্ষকে অপসারণ করা এবং এটি নিশ্চিত করা দরকার যে কেবলমাত্র তারাই অবশিষ্ট রয়েছেন।
গেমের মানচিত্রের উপলভ্য নিরাপদ অঞ্চলটি সময়ের সাথে সাথে আকারে হ্রাস পায়, বেঁচে থাকা খেলোয়াড়দেরকে শক্তিশালী জায়গায় মুখোমুখি করার নির্দেশ দেয়। শেষ খেলোয়াড় বা দল রাউন্ড জয় লাভ করে।
বর্তমানে স্মার্টফোনের ব্যবহার শুধু ভয়েস কল ও মেসেজ এর জন্য করা হচ্ছে না। বরং ফোটোগ্রাফি, ভিডিও র পাশাপাশি গেমিংয়ে এর জন্যও করা হয়ে থাকে। এছাড়া গেমিংয়ের জন্য অনেকের প্রথম পছন্দ স্মার্টফোন। আপনি সাধারণ মিড রেঞ্জের ফোনেও ভাল গেমিংয়ের সুবিধা পাবেন। এই সময় বাজারে প্রতিটি স্মার্টফোনেই বেসিক গেমিংয়ের ফিচার পাওয়া যায়।
নিচে জনপ্রিয় ভিডিও গেমস সমূহ সচ্ছন্দ্বে খেলা সম্ভব এমন কয়েকটি গেমিং স্মার্টফোন এর বর্ণনা দেওয়া হলো….
Asus ROG Phone 5
প্রো ও আল্টিমেট ভ্যারিয়েন্টে দেশের বাজারে এসে গেল Asus ROG Phone 5। এক্ষেত্রে মোট তিনটি অর্থাৎ ROG Phone 5, ROG Phone 5 Pro ও ROG Phone 5 Ultimate মডেলে পাওয়া যাবে এই স্মার্টফোন। সেই অনুযায়ী, রেগুলার ROG Phone 5-এ RAM-এর পরিমাণ ৮ GB ও ১২ GB। ROG Phone 5 Pro ফোনে ব়্যামের পরিমাণ ১৬ GB। অন্য দিকে, ROG Phone 5 Ultimate-এ থাকছে ১৮ GB পর্যন্ত RAM।
Asus ROG phone 5 এর দাম
প্রথমেই স্টোরেজ অপশন অনুযায়ী ফোনের দামগুলি দেখে নেওয়া যাক। এক্ষেত্রে ৮ GB + ১২৮ GB স্টোরেজ অপশনে Asus ROG Phone 5-এর দাম হবে ৪৯,৯৯৯ টাকা। ১২ GB + ২৫৬ GB স্টোরেজ অপশনে ফোনটির দাম ৫৭,৯৯৯ টাকা। অন্য দিকে, ১৬ GB + ৫১২ GB স্টোরেজ অপশনে ফোনটির দাম ৬৯,৯৯৯ টাকা।
এগুলির পাশাপাশি ১৮ GB + ৫১২ GB স্টোরেজ অপশনে Asus ROG Phone 5 Ultimate ভার্সনের দাম হবে ৭৯,৯৯৯ টাকা। মূলত ফ্যান্টম ব্ল্যাক ও স্টর্ম হোয়াইট কালার অপশনে পাওয়া যাবে এই ফোন।
Asus ROG phone 5 এর ফিচার
অ্যান্ড্রয়েড ১১ ভার্সনে চলে এই ফোন। ফোনে রয়েছে অক্টো-কোর কোয়ালকম স্ন্যাপড্রাগন (octa-core Qualcomm Snapdragon 888 SoC) প্রসেসর। স্মার্টফোনটির ডিসপ্লে ৬.৮৭ ইঞ্চি। ফুল HD + AMOLED ডিসপ্লের রেজোলিউশন ১০৮০ X ২,৪৪৮ পিক্সেলস। এর পাশাপাশি ডিসপ্লের আসপেক্ট রেশিও ২০.৪: ৯ ও রিফ্রেশ রেট ১৪৪ Hz।
গত বছরের ROG Phone 3-এর মতো এই ফোনটিতেও এয়ার ট্রিগার ৫, ডুয়াল ফ্রন্ট ফায়ারিং স্পিকার, মাল্টি অ্যান্টেনা Wi-Fi, কোয়াড মাইক নয়েজ-ক্যানসেলিং-সহ একাধিক ফিচার রয়েছে। ফোনে অনবোর্ড স্টোরেজের পরিমাণ ৫১২ GB পর্যন্ত।
এর ক্যামেরা পারফরম্যান্সও বেশ ভালো। এক্ষেত্রে Asus ROG Phone 5-এ থাকছে ট্রিপল রেয়ার ক্যামেরা সেট-আপ। ফোনের পিছনের দিকে থাকছে ৬৪ মেগা পিক্সেল প্রাইমারি সেন্সর, ১৩ মেগা পিক্সেল সেকেন্ডারি সেন্সর ও ৫ মেগা পিক্সেল ম্যাক্রো শ্যুটার। সামনের দিকে থাকছে ২৪ মেগা পিক্সেল ক্যামেরা।
ফোনের ব্যাটারি ব্যাক-আপ নিয়ে খুব একটা চিন্তার কারণ নেই।। কারণ নতুন Asus ROG Phone 5-এ থাকছে ডুয়াল সেল যুক্ত ৬,০০০ mAh ব্যাটারি। যা ৬৫ W পর্যন্ত ফাস্ট চার্জিং সাপোর্ট করে। ফোনের আয়তন ১৭২.৮ x ৭৭.২ x ১০.২৯ mm। ওজন প্রায় ২৩৮ গ্রামের কাছাকাছি। ফোনটির কানেক্টিভিটি অপশনও যথাযথ। এক্ষেত্রে Asus ROG Phone 5-এ থাকছে 5G, 4G LTE, Wi-Fi 6 কানেকশন ও ব্লু টুথ 5.0 ভার্সন। রয়েছে USB Type-C পোর্ট ও ৩.৫ mm হেডফোন জ্যাক।
OnePlus 7 Pro
6GB RAM+128GB স্টোরেজে OnePlus 7 Pro এর দাম 48,999 টাকা। 8GB RAM+256GB স্টোরেজে এই ফোন কিনতে খরচ হবে 52,999 টাকা। টপ ভেরিয়েন্টে 12GB RAM+256GB স্টোরেজে OnePlus 7 Pro এর দাম 57,999 টাকা।
Oneplus 8 pro:8/12 GB RAM + 128/256 GB ROM স্টোরেজ।ব্যাটারি 4510 mAh।processor অক্টা-কোর – কোয়ালকম স্ন্যাপড্রাগন 865 (7 এনএম +)।
Oneplus 9 Pro :oneplus 9 Pro ফোনটি একটি Qualcomm SM8350 Snapdragon 888 প্রসেসর দ্বারা চালিত হয়। স্মার্টফোনটি 8 GB এর সঙ্গে পাওয়া যায়। ফোনটি 128 GB অভ্যন্তরীণ স্টোরেজের সঙ্গে পাওয়া যায়।
Vivo X60 Pro
ফোনটি একটি 1×3.2 GHz, 3×2.42 GHz, 4×1.80 GHz Octa-core কোর প্রসেসর দ্বারা চালিত হয় এবং এটি RAM এর 12 GB এর সঙ্গে পাওয়া যায়। ভিবো x60 pro টি Android 11 OS পরিচালিত করে।
IPhone 11 Pro Max
অ্যাপল আইফোন 11 প্রো ম্যাক্সের দাম 1,39,999 টাকা। অ্যাপল আইফোন 11 প্রো ম্যাক্স অ্যাপল আইফোনটি 6.5 ইঞ্চি, 102.9 সেমি 2, সুপার রেটিনা এক্সডিআর ওএলইডি ক্যাপাসিটিভ টাচস্ক্রিন, 16 এম রঙের ডিসপ্লে এবং রেজোলিউশন 1242 x 2688 পিক্সেল, 19.5: 9 অনুপাত 458 ডলার নিয়ে আসে পিপিআই ঘনত্ব।
আইফোন 11 প্রো ম্যাক্স পারফর্মিং হেক্সা কোর 2 × 2.65 গিগাহার্টজ লাইটনিং + 4 × 1.8 গিগাহার্টজ থান্ডার, অ্যাপল এ 13 বায়োনিক 7 এনএম + প্রসেসর। এতে 6 জিবি র্যাম এবং 128/256/512 জিবি অভ্যন্তরীণ স্টোরেজ রয়েছে, যা বাহ্যিক স্টোরেজে প্রসারিত করা যায় না।
এই স্টাইলিশ ডিভাইসে সামনের দিকে 12 MP, 12 MP, 12 MP এবং পিছনে 12 MP, TOF 3D ক্যামেরা রয়েছে। এটি একটি স্ট্যান্ডার্ড 3500 এমএএইচ লি-আয়ন ব্যাটারি দ্বারা চালিত ছিল।
IPhone 12 Pro Max
অ্যাপল আইফোন 12 প্রো ম্যাক্স একটি 6.7 ইঞ্চি সুপার রেটিনা এক্সডিআর ওএলইডি স্ক্রিন সহ আসে যা এর অন্যতম প্রধান বৈশিষ্ট্য। এটি একটি শাস্ত্রীয় অ্যাপল আইফোন খাঁজ ডিজাইন আছে।
ব্যাক ক্যামেরাটি কোয়াড 12 + 12 + 12 এমপি + তোফ 3 ডি রয়েছে শক্তিশালী চিত্র প্রক্রিয়াকরণ ক্ষমতা এবং আল্ট্রা এইচডি 4 কে ভিডিও রেকর্ডিং সহ। এর প্রথমটি ডুয়েল 12 এমপি এবং এসএল 3 ডি ক্যামেরার camera অ্যাপল আইফোন 12 প্রো ম্যাক্স 18W দ্রুত চার্জিং সলিউশন সহ লি-আয়ন ব্যাটারি নিয়ে আসে।
এতে 6 জিবি র্যাম, হেক্সা কোর সিপিইউ এবং অ্যাপল জিপিইউ রয়েছে। এটি একটি 5 এনএম অ্যাপল এ 14 বিওনিক চিপসেট দ্বারা চালিত। ডিভাইসটি 128, 256 বা 512 জিবি অভ্যন্তরীণ স্টোরেজ সহ আসে।
ভিডিও গেমস আসক্তি’র ক্ষতিকর দিক
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এই প্রথমবারের মতো ভিডিও গেমস আসক্তিকে মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যার তালিকাভুক্ত করেছে। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে রোগব্যাধির শ্রেণি বিন্যাসের তালিকায় এই আসক্তিকে ”গেমিং রোগ” বলে চিহ্ণিত করা হয়েছে।
খসড়া একটি নথিতে ভিডিও গেমস আসক্তিকে একটা আচরণগত সমস্যা হিসাবে উল্লেখ করে বলা হয়েছে এই আচরণে আসক্তির সব লক্ষ্মণ রয়েছে অর্থাৎ বারবার এই খেলার প্রবণতা দেখা যায় এবং এর থেকে সরে আসা কঠিন বলেও দেখা যায়। এছাড়াও ”জীবনের অন্যান্য সব কিছু ছাপিয়ে প্রাধান্য পায়” এই গেমিং-এর নেশা।
কোন কোন দেশে ভিডিও গেম খেলার নেশাকে ইতিমধ্যেই বড়রকম জন স্বাস্থ্য সমস্যা হিসাবে চিহ্ণিত করা হয়েছে।
পাঠ্যবইয়ে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ে পড়েছি, ২০০৯ সালে চীন দেশে এক দম্পতি কম্পিউটার গেমস আসক্তির ফলে টাকার জন্য নিজের সন্তান বেচে দেন।
তারা তাদের তিনজন ছেলেমেয়েকে ভিন্ন ভিন্ন সময়ে আনুমানিক নয় হাজার ডলারে বেচে দিয়েছিলেন। এই টাকা দিয়ে তারা তাদের এমএমও (ম্যাসিভলি মাল্টিপ্লেয়ার অনলাইন) নামে এক ধরনের কম্পিউটার গেমস খেলতেন। তাদের দুজনেরই এমএমও খেলার প্রতি তীব্র আসক্তি ছিল।
কম্পিউটার গেমস সাধারণত দুই ধরনের হয়। এক ধরনের গেমস আছে যেগুলোতে একটি নির্দিষ্ট লক্ষ্য থাকে। যেমন- কোনো রাজকন্যাকে উদ্ধার করা, মোটরসাইকেল বা কার রেসে প্রথম হওয়া, সর্বোচ্চ পয়েন্ট অর্জন করা, কম সময়ের মধ্যে একটি কাজ শেষ করা। এগুলোতে কয়েকবার টার্গেটে পৌঁছতে পারলে ঐ গেমের প্রতি আসক্তি কমে আসে।
আর আরেক ধরনের গেইম আছে যেগুলো একসাথে অনেক জন মিলে অনলাইনে খেলা যায়। এই গেইমগুলোই এমএমও গেমস। এগুলোই বেশি আসক্তি তৈরি করে। কেননা এই গেমসগুলোর কোনো শেষ থাকে না।
ওই দম্পতি এমনই একটি গেমসে জড়িয়ে পড়েন। এমএমও ধরনের গেমসগুলোতে খেলোয়াড় একটি অনলাইন চরিত্রে পরিণত হয় এবং অন্য খেলোয়াড়দের সাথে সম্পর্ক গড়ে তোলে। এখান থেকে বের হওয়া কঠিন।
এই ভিডিও গেমসগুলো যারা বানায় তাদের উদ্দেশ্য থাকে মুনাফা লাভ করা। যতবার গেমসগুলো খেলা হবে তাদের তত লাভ হবে। এ জন্য তারা এগুলোতে বিভিন্ন আকর্ষণীয় ফিচার রাখে যা মানুষকে উৎসাহিত করে।
আসক্ত হয়ে সারাক্ষণ তারা এটা নিয়েই ভাবতে থাকে। কীভাবে সর্বোচ্চ পয়েন্ট অর্জন করবে, কেমন করে তার প্রতিযোগীকে হারাবে। গেমসের প্রতিটি ঘটনা তার মাথায় ঘুরতে থাকে। সে যখন খেলা বন্ধ করে অফলাইন থাকে তখনও ভাবতে থাকে তার কোন প্রতিযোগী মনে হয় তাকে ছাড়িয়ে চলে গেল।
সে যখন গেমসটি খেলতে বসে তখন তার মাঝে এক ধরনের অস্বাভাবিক উত্তেজনা কাজ করে। এর ফলে পড়ালেখাসহ রোজকার কাজে ব্যাঘাত ঘটে। এ ছাড়াও সে শারীরিক ও মানসিক সমস্যায় আক্রান্ত হয়।
খেলার সময় অতিরিক্ত সময় ধরে মাউস ও কি-বোর্ড ব্যবহারের ফলে কার্পাল টানেল সিন্ড্রোম নামের এক প্রকারের কব্জির প্রদাহজনিত রোগ হতে পারে। রোগের প্রথম দিকে কব্জির ব্যায়াম দ্বারা এ রোগের উপশম হয়। তবে মারাত্মক আকার ধারণ করলে অস্ত্রোপচারও করতে হয়।
এছাড়া দীর্ঘ সময় ধরে অত্যন্ত মনোযোগ দিয়ে খেলার জন্য চোখ ও মস্তিষ্কের ওপর চাপ পড়ে মাইগ্রেনের ব্যথা হয়। গেমসের ঘটনাগুলো খেলোয়াড়ের মস্তিষ্ককে তাড়িত করে। ফলে অনিদ্রা, ঘুমের সময় হাত-পায়ের ঝাঁকুনি, হাঁটা বা কথা বলা এমনকি দুঃস্বপ্ন দেখাসহ বেশ কিছু ঘুম সংক্রান্ত রোগ হতে পারে। দীর্ঘ সময় ধরে বসে থেকে খেলার ফলে পিঠে ব্যথাও হতে পারে।
ভিডিও গেমস আসক্তি পেয়ে বসার কারণে ঠিকমতো গোসল করা, দাঁত মাজা, ঠিক সময়ে খাবার খাওয়া ইত্যাদি না করার ফলে শারীরিক দুর্বলতা, অবসাদগ্রস্ততাসহ বিভিন্ন রোগের জন্ম দিতে পারে। এছাড়াও অতিরিক্ত গেমস খেলা চোখ ও কানের সমস্যা তৈরি, ঘাড়ে ব্যথা, কনুইতে ব্যথা, মূত্রের বেগ ধারণের অক্ষমতার জন্ম দেয়। শারীরিক সমস্যার পাশাপাশি বিভিন্ন সামাজিক সমস্যাও তৈরি করে।
এই সমস্যাগুলো স্বল্প বা দীর্ঘমেয়াদি হতে পারে। মাত্রাতিরিক্ত ভিডিও গেমস আসক্তি মৃত্যুরও কারণও হতে পারে।
কোরিয়ায় এক লোক টানা পঞ্চাশ ঘন্টা করে কম্পিউটার গেমস খেলতেন। একদিন তিনি খেলতে খেলতেই মারা গেলেন। যে কোনো আসক্তি থেকে বাঁচার উপায় হলো তার ক্ষতিকর দিকগুলো নিয়ে চিন্তা করা এবং ঐ কাজ থেকে ফিরে আসার জন্য দৃঢ়প্রতিজ্ঞ হওয়া।
ভিডিও গেমস বেশি না খেলে ভালো ভালো বই পড়া, ছবি আঁকা, সিনেমা দেখা, বিভিন্ন জায়গায় ঘুরতে যাওয়া কিংবা বন্ধুদের সাথে খেলাধুলা করা যেতে পারে। আমাদের খুব সতর্ক থাকতে হবে যেন কোনো কিছুতে আসক্তি না জন্মে যায়, যেহেতু একবার সেটায় আসক্তি জন্মে গেলে সেখান থেকে বের হওয়া অনেক কঠিন। তাই সবচেয়ে ভালো হচ্ছে কোনো কিছুতেই আসক্ত না হওয়া।
প্রাসঙ্গিক লেখাসমূহ-