মিউজিকের ক্ষেত্রেও “কপিরাইট ফ্রি বা রয়্যালিটি ফ্রি” বলে একটা কথা আছে! আজ তাই এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি সম্পর্কে আলোচনা করব। এছাড়া, কপিরাইট ফ্রি মিউজিক কি এবং নির্ভাবনায় পছন্দের মিউজিকটি ডাউনলোড করার জন্য প্রয়োজনীয় কয়েকটি কপিরাইট ফ্রি মিউজিক ডাউনলোড করার সাইট এর সাথে আপনাদের পরিচয় করিয়ে দিব।
আমি তখন নতুন নতুন ইউটিউবের সঙ্গে পরিচিত হয়েছি। ঝোঁকের মাথায় বন্ধুদের সাথে নিয়ে ফানি ভিডিও বানিয়ে ফেললাম। এরপর খেয়াল খুশি মতো যেকোনো জায়গা থেকে মিউজিক ও সাউন্ড ইফেক্ট সংগ্রহ করে সেগুলো ভিডিও এর সঙ্গে জুড়ে দিলাম।
ইউটিউবে ভিডিওগুলো প্রকাশ করার পর প্রথম মাসেই আশাতীত ফলাফল পেয়েছিলাম। একেকটা ভিডিওতে ভিউয়ের সংখ্যা হাজার ছাড়াতো। কিন্তু সমস্যা শুরু হয় মাস তিনেক পর।
প্রতিটা ভিডিওতেই কপিরাইট মিউজিক ক্লেইম আসে। ইউটিউব আমার প্রতিটা ভিডিও থেকে মিউজিক এবং এর পাশাপাশি সাউন্ডইফেক্টগুলো সরিয়ে ফেলে।
যেহেতু, আমার কনটেন্ট ছিল ফানি ভিডিও, তাই ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক সরিয়ে ফেলায় সবগুলোর কোয়ালিটি যাচ্ছেতাই হয়ে যায়। একারণেই পরবর্তীতে সিদ্ধান্ত নিই, আমি আমার ভিডিওতে শুধুমাত্র সেই সমস্ত মিউজিক ব্যবহার করব, যেগুলো ব্যবহার করলে কোন প্রকার কপিরাইট স্বত্ব ভঙ্গ করার ক্লেইম আসবে না।
অর্থাৎ, কপিরাইট ফ্রি বা রয়্যালিটি ফ্রি মিউজিক ব্যবহার করব। ফলশ্রুতিতে, ভিডিওগুলো যখন, যেখানে, যতদিন খুশি ব্যবহার করতে পারব।
কপিরাইট ফ্রি বা রয়্যালিটি ফ্রি মিউজিক কি?
যে সকল মিউজিক ব্যবহারের জন্য মিউজিকটির মূল অথরকে কোন প্রকার মূল্য পরিশোধ করতে হয় না এবং বিনামূল্যেই ব্যবহার করা যায়, সেগুলোকে কপিরাইট ফ্রি মিউজিক বলে। কপিরাইট ফ্রি মিউজিকের আরেক নাম রয়্যালিটি ফ্রি মিউজিক।
একজন অথর যখন একটি মিউজিক তৈরী করে, তখন সে সেই মিউজিকটিকে নিজের সৃষ্টি হিসেবে জ্ঞান করে। মিউজিকটি অন্যদের শোনানোর জন্য সে বিভিন্ন মিউজিক শেয়ারিং সাইটে প্রকাশ করে থাকে।
এখন, কেউ যদি সেই অথরকে না জানিয়ে তার মিউজিকটি নিজের ভিডিওতে যুক্ত করে দেয়, তবে এটা একধরণের “চুরি” হয়ে যায়। তখন মিউজিকটির মূল অথর “চোর” এর বিরুদ্ধে চাইলেই ব্যবস্থা নিতে পারে।
এই ধরণের বিধিনিষেধের কারণে কনটেন্ট ক্রিয়েটরদের পড়তে হয় বেকায়দায়। কেননা, সকল কনটেন্ট ক্রিয়েটরের আর্থিক অবস্থা এতোটাও ভালো নয় যে, তারা নতুন নতুন ভিডিও এর জন্য নতুন নতুন মিউজিক মূল অথরের কাছ থেকে কিনে নিতে পারবে।
আবার, নিজে থেকে মিউজিক তৈরী করাও কঠিন ব্যাপার। ফলে, কনটেন্ট ক্রিয়েটররা ভিডিও তৈরী করার আগ্রহ হারিয়ে ফেলবে।
এই সমস্যা সমাধানের জন্য, বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী অথর এবং ওয়েবসাইট কপিরাইট ফ্রি মিউজিক বা রয়্যালিটি ফ্রি মিউজিকের সম্ভার গড়ে তুলেছে। এই মিউজিকগুলো শর্তসাপেক্ষে যে কেউ ব্যবহার করতে পারে।
আরও পড়ুন –
সেরা ৭টি কপিরাইট ফ্রি মিউজিক ডাউনলোড করার সাইট
#1 Mixkit.co
শুধু কপিরাইট ফ্রি মিউজিক নয়, Mixkit এ আছে কপিরাইট ফ্রি Videos, Sound Effects, Premiere Pro, After Effects, Final Cut Pro এবং DaVinci Resolve।
Mixkit এ আলাদা আলাদা ক্যাটাগরিতে প্রচুর কন্টেন্ট রয়েছে। এজন্য এখান থেকে খুব কম সময়েই কাঙ্খিত কন্টেন্ট বেছে নেয়া যায়।
Mixkit কোনো প্রকার লাইসেন্স ছাড়াই এর মিউজিকসহ যেকোনো কন্টেন্ট ডাউনলোডের সুবিধা দিয়ে থাকে। এখানে কপিরাইট ফ্রি মিউজিক এর জন্য আপনার সাইন আপ করারও প্রয়োজন হবে না।
কমার্শিয়াল বা নন কমার্শিয়াল যেকোনো ক্ষেত্রে আপনি এসব মিউজিক ব্যবহার করতে পারেন। সেই সাথে অন্যান্য কপিরাইট ফ্রি মিউজিক ডাউনলোড করার সাইটের মতো এখানে ক্রেডিট দেয়ার কোন বাধ্যবাধকতা থাকে না।
Mixkit এর মিউজিকগুলো যেসব ক্ষেত্রে ব্যবহার করা যাবে-
১. পডকাস্ট
২. সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্ম
৩. অনলাইন মার্কেটিং বিজ্ঞাপন
৪. শিক্ষামূলক কার্যক্রম
৫. ইউটিউব ভিডিও
৬. ব্লগ
৭. মিউজিক ভিডিও
৮. ওয়েবসাইট
Mixkit এর মিউজিকগুলো যেসব ক্ষেত্রে ব্যবহার করা যাবে না-
১. সিডি বা ডিভিডি
২. টিভি/রেডিও ব্রডকাস্ট
৩. ভিডিও গেম
এসকল মিউজিক আপনি কোনো লাইসেন্স ছাড়াই ডাউনলোড, এডিট, ফরম্যাট, কপি ও শেয়ার করতে পারেন। এছাড়া পডকাস্টিং বা বিজ্ঞাপনের ক্ষেত্রেও ব্যবহার করা যেতে পারে। তবে কখনোই কোনো মিউজিক পরিবর্তন বা রিমিক্স করে নিজের নামে রেজিষ্ট্রেশন করা যাবে না।
কপিরাইট ক্লেইম জনিত যেকোনো সমস্যায় সাহায্যের জন্য Mixkit যোগাযোগের (team@mixkit.co) ব্যবস্থা রেখেছে।
ফ্রি মিউজিকের পাশাপাশি আপনি elements.envato এর মাধ্যমে হাই কোয়ালিটি অডিও ট্র্যাক কিনে নিতে পারেন। এখানে রয়েছে Graphic templates, Video templates, Stock photos, Music tracks সহ প্রচুর Web templates। সাবস্ক্রিপশনটি শুরু হয় $১৬.৫০/মাস থেকে।
Mixkit ওয়েবসাইটে মিউজিক অংশে প্রবেশের সাথে সাথেই আপনি elements.envato এর সাবস্ক্রিপশনটি দেখতে পাবেন।
ওয়েবসাইটের ঠিকানা: https://mixkit.co
#2 Bensound
কপিরাইট ফ্রি মিউজিক এর জন্য Bensound বেশ সমৃদ্ধ একটি ওয়েবসাইট। এখানে ৪ ধরণের লাইসেন্স প্রদান করা হয়।
FREE License
এই লাইসেন্সে আপনাকে কোনো টাকা খরচ করতে হবে না। পছন্দের মিউজিক ডাউনলোড করে ব্যবহার করতে পারবেন বিনামূল্যেই। এ লাইসেন্সে, কোন মিউজিক আপনি ইউটিউব, সোশ্যাল মিডিয়া, লাইভ স্ট্রিমিং, এনিমেশন স্লাইডশো, ওয়েবসাইট ব্যাকগ্ৰাউন্ড ও প্রেসেন্টেশনে ব্যবহার করতে পারবেন। এবং এজন্য আপনাকে অবশ্যই ক্রেডিট দিতে হবে।
ক্রেডিটে লিখতে হবে-
“Music:https://www.bensound.com/royalty-free-music”
অথবা,
“Music: « Song Title » from Bensound.com”
Standard License (€34 EUR Per Track)
এই লাইসেন্সটি আপনাকে কিনে নিতে হবে। এগুলো ইউটিউব, সোশ্যাল মিডিয়া, প্রেজেন্টেশন, ওয়েবসাইটে ব্যবহারের পাশাপাশি আপনি রেস্টুরেন্ট, লাইব্রেরি, জিম বা শপে ব্যাকগ্ৰাউন্ড মিউজিক হিসেবেও ব্যবহার করতে পারবেন।
Extended License (€65 EUR Per Track)
এ মিউজিকগুলো সোশ্যাল মিডিয়া, ইউটিউব, ওয়েবসাইট, রেস্টুরেন্ট বা লাইব্রেরিতে ব্যাকগ্ৰাউন্ড মিউজিক হিসেবে সহজেই ব্যবহারযোগ্য। অর্থাৎ, FREE ও Standard লাইসেন্সের সুবিধাগুলো এখানে অন্তর্ভুক্ত।
এছাড়া এ লাইসেন্স ওয়েব/স্থানীয় টিভি বা রেডিও বিজ্ঞাপন, ভিডিও গেম, টিভি বা রেডিও ব্রডকাস্ট, অনলাইন কোর্স, সিডি, ডিভিডি, সফটওয়্যার ও সিনেমায় মিউজিকগুলো ব্যবহারের অনুমতি দিয়ে থাকে।
TV/Radio Ad License (€580 EUR Per Track)
এ লাইসেন্সে FREE, Standard ও Extended License এর সকল সুবিধা দেয়া হয়। তবে এর বিশেষ বৈশিষ্ট্য হলো- এ লাইসেন্সে কেনা মিউজিক আপনি আন্তর্জাতিকভাবে টিভি/রেডিও এর বিজ্ঞাপনের কাজে ব্যবহার করতে পারবেন। অন্য কোন লাইসেন্স আপনাকে এ সুযোগ দেবে না।
Bensound ক্লায়েন্টদের জন্য কিছু সীমাবদ্ধতা রেখেছে।
যেমন-
১. কোনো মিউজিক রিমিক্স করা।
২. মিউজিকে লিরিক্স যুক্ত করে গান তৈরি করা।
৩. কোন মিউজিক নিজের বলে দাবি করা।
৪. পডকাস্ট বা অডিও বুক তৈরি।
৫. কোন সাইটে এসব মিউজিক বিক্রি করা।
আপনি যে লাইসেন্সেই মিউজিক কেনেন না কেন, আপনাকে কখনোই এই পাঁচটি কাজের জন্য অনুমতি দেয়া হবে না।
ওয়েবসাইটের ঠিকানা: https://bensound.com
#3 Joshwoodward
এ ওয়েবসাইটের বিশেষত্ব হলো, শুধুমাত্র একজন মিউজিশিয়ানের মিউজিকই এখানে রয়েছে। এবং ওয়েবসাইটের নামটা তারই নামে। হ্যাঁ, Joshwoodward; হচ্ছেন একজন মিউজিশিয়ান।
এই সাইটের সকল গান তার নিজেরই। সাইটটির মাধ্যমে তিনি সকলকে নিজের প্রায় ২০০ টি গান বিনামূল্যে ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছেন।
ভোকাল ও ইনস্ট্রুমেন্টাল দুধরনের মিউজিকই এখানে রয়েছে। গান ও মিউজিকগুলো আপনি কমার্শিয়াল বা নন কমার্শিয়াল যে কোনো কাজেই ব্যবহার করতে পারেন।
সাইটটিতে প্রথমবার মিউজিক ডাউনলোড করার সময় আপনার ইমেইল আইডি চাওয়া হবে। এর মাধ্যমে আপনার একাউন্টটি মেইলিং লিস্টে যুক্ত করা হবে।
এবার আপনার নাম ও অবস্থান দিয়ে দিলেই কাজ শেষ। তারপর আপনি যত খুশি মিউজিক ডাউনলোড করতে পারবেন। পরবর্তীতে আপনি চাইলে ইমেইল আন-সাবস্ক্রাইব করে দিতে পারেন।
ডাউনলোড করা গানে যে কোনো ধরণের পরিবর্তন করার অনুমোদন আপনাকে দেয়া হবে। এমনকি কিছু শর্ত সাপেক্ষে আপনি গানের রিমিক্সও তৈরি করতে পারবেন।
গানগুলো বিনামূল্যে ব্যবহার করতে আপনাকে অবশ্যই তার ক্রেডিট দিতে হবে। এর জন্য নির্দিষ্ট নিয়ম রয়েছে।
ক্রেডিট দেয়ার নিয়মটি হলো এরুপ-
Music – “SONG TITLE HERE” by Josh Woodward. Free download: http://joshwoodward.com/
ইউটিউব ভিডিও এর ক্ষেত্রে ডেস্ক্রিপসন বক্সে এভাবে ক্রেডিট দেয়া আবশ্যিক। ভিডিও গেম, লাইভ স্ট্রিমিং, ওয়েবসাইট ব্যাকগ্ৰাউন্ড, টিভি শো/সিনেমার জন্যেও ক্রেডিট দিতে হবে। ক্রেডিট দেয়া না হলে কপিরাইট ক্লেইম আসার সম্ভাবনা থেকে যাবে।
বিনামূল্য ডাউনলোড করা মিউজিক বিজ্ঞাপনের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়। এজন্য traditional license ($30 per song) এর প্রয়োজন পড়ে।
এছাড়া আপনি blanket license ($300) নিতে পারেন। সেক্ষেত্রে আপনাকে ২০০ টি গান বিভিন্ন ফরম্যাটসহ দেয়া হবে। তাছাড়া গানের ফুল কোয়ালিটি FLAC Version পেতে আপনি epic bundle ($40) নিতে পারেন।
এই লাইসেন্সগুলো আপনাকে গানের উপর পূর্ণ অধিকার দেবে। তাই আপনাকে আর ক্রেডিট দিতে হবে না।
ওয়েবসাইটের ঠিকানা: https://www.joshwoodward.com/
#4 Epidemic Sound
Epidemic Sound 35,000 tracks এবং 90,000 sound effect এ সমৃদ্ধ একটি ওয়েবসাইট। কোয়ালিটি সম্পন্ন কপিরাইট ফ্রি মিউজিক ডাউনলোড করার সাইটটি বেশ জনপ্রিয়। এখানে আপনাকে ৩০ দিনের ফ্রী ট্রায়ালের সুযোগ দেয়া হবে। আপনি যে কোনো সময় এই ট্রায়াল বাতিল করতে পারবেন।
ফ্রি ট্রায়ালের জন্য আপনাকে ইমেইল আইডি ও পাসওয়ার্ড দিয়ে একটি একাউন্ট তৈরি করতে হবে। এরপর আপনাকে এরকম প্লাটফর্মের নামসহ কিছু অপশন দেয়া হবে।
- YouTube channel
- Instagram username
- Podcast RSS feed
- Twitch account
এখান থেকে আপনি কোন কোন জায়গায় এই মিউজিকগুলো ব্যবহার করতে চান তা সিলেক্ট করতে হবে। সিলেক্ট করা একাউন্টে কপিরাইট ক্লেইম আসবে না।
Epidemic Sound বেশ কয়েক ধরণের সাবস্ক্রিপশন দিয়ে থাকে।
যেমন-
Personal
এই সাবস্ক্রিপশনটি ব্যাক্রিগত ব্যবহারের জন্য। এ লাইসেন্সে নিজস্ব ফেসবুক প্রোফাইল, টুইটার, ইনস্ট্রাগ্ৰাম, পডকাস্ট, ইউটিউব চ্যানেলের জন্য মিউজিকগুলো ব্যবহার করা যাবে। এটি মনিটাইজেশনের ক্ষেত্রেও কোন সমস্যা করবে না। সাবস্ক্রিপশনটির মূল্য- $১৫/মাস এবং $১৪৪/বছর।
Commercial
এই সাবস্ক্রিপশনটি ব্যবসায়ী ও ফ্রিল্যান্সারদের জন্য। বিভিন্ন ব্যবসায়িক ব্যবহারে কপিরাইট ফ্রি মিউজিকের জন্য এ সাবস্ক্রিপশন নিতে পারেন। এখানে আপনাকে সোশ্যাল মিডিয়া, অনলাইন প্লাটফর্ম, ডিজিটাল এডসহ মিউজিকের আনলিমিটেড ব্যবহারের নিশ্চয়তা দেয়া হবে। লাইসেন্সটির মূল্য- $৪৯/মাস এবং $২৯৯/বছর।
Enterprise
যেকোনো প্রকাশক বা কম্পানির জন্য এই সাবস্ক্রিপশনটি রাখা হয়েছে। টিভি, স্ট্রিমিং ও মিউজিক কাস্টমাইজসহ বিভিন্ন কাজে এ মিউজিকগুলো ব্যবহার করা যাবে।
সাবস্ক্রিপশনগুলো কিনতে আপনার অবশ্যই Credit card বা PayPal একাউন্ট প্রয়োজন হবে।
ওয়েবসাইটের ঠিকানা: https://www.epidemicsound.com/
#5 Freestockmusic
Freestockmusic রয়ালিটি ফ্রি মিউজিকের জন্য আরেকটি জনপ্রিয় ওয়েবসাইট। এখানে আপনি সাইন আপের ঝামেলা ছাড়াই মিউজিক ডাউনলোড করতে পারবেন।
মিউজিকগুলোকে নিজের ইচ্ছেমত MP3 File বা WAV File হিসেবে ডাউনলোড করা যায়। ইউটিউব ভিডিও, ব্লগ, ভ্লগ, পডকাস্ট, সোশ্যাল নেটওয়ার্ক যেকোনো ক্ষেত্রে মিউজিকগুলো ব্যবহার করা যাবে। তবে ব্যবহারের সময় অবশ্যই ক্রেডিট দিতে হবে।
রেস্টুরেন্ট, লাইব্রেরি, বুটিক হাউস, রিসিপশন বা কফি হাউজে ব্যাকগ্ৰাউন্ড মিউজিক হিসেবে ব্যবহারের জন্য Freestockmusic, FSM Team No Copyright Music Playlist নামক একটি বিশেষ প্লে-লিস্ট তৈরি করেছে। এক্ষেত্রে এই মিউজিকগুলো আপনি নিশ্চিন্তে ব্যবহার করতে পারবেন।
Freestockmusic এ প্রতিটি মিউজিকের নিচে ক্রেডিট দেয়ার ধরণ লিখে রাখা আছে। সেখান থেকে কপি পেস্ট করে নিজের তৈরি কন্টেন্টে দিতে হবে। ক্রেডিট দেয়া না হলে আপনার কন্টেন্টে কপিরাইট ক্লেইম আসার সম্ভাবনা থেকে যাবে।
Freestockmusic এ সাবস্ক্রিপশন ব্যবস্থাও রয়েছে। প্রতি মিউজিকের জন্য $৮ এবং প্রতি ডিজিটাল এ্যলবামের জন্য $৪০ । এসব লাইসেন্সে কেনা মিউজিক ব্যবহারের জন্য আপনাকে কোনো প্রকার ক্রেডিট দিতে হবে না।
সাইটটির একটি বিশেষত্ব হলো মিউজিকগুলো বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে দারুনভাবে সাজানো। যেমন-
মিউজিকের ধরণ (category)
Audio Logos & Musical Idents, Sound Effects, Video Game Music (VGM), Piano, Cinematic, etc.
ভাব (mood)
Energetic, Powerful, Calm, Relaxing, Action, Angry, Aggressive, Adventurous, etc.
লাইসেন্স
CC0 Universal 1.0,
CC-BY (Unported) 3.0,
CC-BY-SA (ShareAlike) 3.0
CC-BY-ND (NoDerivs) 3.0 Unported,
CC-BY (International) 4.0
স্পিড (Tempos)
Slow ( < 60 BPM) Medium Slow (60-90 BPM) Medium (90-140 BPM) Medium Fast (140-180 BPM Fast ( > 180 BPM)
দৈর্ঘ্য (Lengths)
Less than 2 minutes
Between 2 and 3 minutes
3 and 4 minutes
4 and 5 minutes
More than 5 minutes
এছাড়া আপনি কীওয়ার্ডের মাধ্যমেও কাঙ্খিত মিউজিক খুব সহজে খুঁজে পাবেন।
Freestockmusic এ আপনি নিজের তৈরি মিউজিক আপলোড করতে পারবেন। নাম, ট্যাগ, সংক্ষিপ্ত বর্ণনা ও ইমেইল আইডি দিয়ে সাবমিট করে দিলেই মিউজিকগুলো Creative Commons License (CC License) এ প্রকাশ করা হবে।
এখান থেকে যেকেউ আপনার মিউজিকগুলো বিনামূল্যে ব্যবহারের অনুমতি পাবে। একারণেই হয়তো Freestockmusic আপনাকে কোনোপ্রকার লভ্যাংশ দেবে না।
ওয়েবসাইটের ঠিকানা: https://www.free-stock-music.com/
#6 YouTube
আপনি যদি একজন ইউটিউবার হয়ে থাকেন, তবে আপনার জন্য সুসংবাদ। কষ্ট করে বিভিন্ন ওয়েবসাইটে ঘুরে ঘুরে আপনার কপিরাইট ফ্রি মিউজিক খুঁজতে হবে না। কেননা, আপনার সুবিধার কথা ভেবে ইউটিউব অনেক আগেই আপনার জন্য এধরণের রয়্যালিটি ফ্রি মিউজিক প্রস্তুত করেই রেখেছে।
আর ইউটিউব প্রদত্ত এসব কপিরাইট ফ্রি মিউজিকের সংখ্যা শত শত নয়, হাজার হাজার। আর খুশির ব্যাপার হলো, এই সংখ্যা নিয়মিতই আপডেট হচ্ছে।
ইউটিউবে কপিরাইট ফ্রি মিউজিকের হদিস পেতে চাইলে প্রথমেই Youtube Studio তে প্রবেশ করুন। তারপর, বাম পাশের অপশনগুলো থেকে Audio Library অপশনটিতে ক্লিক করুন।
এখানে আপনি শুধুমাত্র কপিরাইট ফ্রি মিউজিকই নয়, পাশাপাশি সাইন্ড ইফেক্টও পেয়ে যাবেন। প্রতিটি সাউন্ড ইফেক্ট ডাউনলোড করে নিশ্চিন্তে নিজের কাজে ব্যবহার করতে পারবেন।
তবে হ্যাঁ, এখানে থাকা সমস্ত মিউজিক আপনি বিনা ক্রেডিটে ব্যবহার করতে পারবেন না। এখানে এমন কিছু মিউজিক আছে, যেগুলো ভিডিওতে যুক্ত করতে গেলে আপনাকবে ডেস্ক্রিপশন বক্স বা ভিডিও এর ভেতরে মিউজিকের আসল মালিককে ক্রেডিট দিতেই হয়।
কোনো মিউজিকে অথরকে ক্রেডিট দিতে হবে কিনা তা নিশ্চিত হওয়ার জন্য আপনি যে মিউজিকটি ব্যবহার করতে চাচ্ছেন, সেটার পাশে ইউটিউব আইকনের উপর কার্সর নিয়ে যান। তাহলেই ঐ অডিও এর জন্য ক্রেডিট দিতে হবে কিনা, তা ইউটিউব আপনাকে বলে দেবে।
তবে এই বিষয়টি নিয়ে দুশ্চিন্তার কোনো কারণ নেই। কেননা, বর্তমানে ইউটিউব লাইব্রেরীতে থাকা বেশিরভাগ মিউজিকই সম্পূর্ণভাবে কপিরাইট ফ্রি এবং ক্রেডিট দেয়ার ঝামেলাও সাধারণত থাকে না।
তবে যদি কোনো মিউজিকে ক্রেডিটের ব্যাপারে বাধ্যবাধকতা দেখেন, তবে অবশ্যই ক্রেডিট দেবেন। এতে কপিরাইট স্ট্রাইক খাওয়ার চান্স শূণ্যের কোঠায় নেমে আসবে।
#7 Soundcloud.com
বাংলা, ইংরেজী এবং হিন্দি গান শোনার জন্য জনপ্রিয় একটি ওয়েবসাইট হলো Sound Cloud । গানের পাশাপাশি এখানে বিভিন্ন কপিরাইট ফ্রি অডিও ট্র্যাকও পাওয়া যায়, যা ডাউনলোড করে কমার্শিয়াল অথবা নন কমার্শিয়াল কাজে ব্যবহার করা যায়।
তবে এসব অডিও ট্র্যাক ডাউনলোড করে ব্যবহারের জন্য সাধারণ ইউজারদের অবশ্যই এখানে সাইন আপ করে নিতে হবে। ইউটিউব এবং ফেসবুকে সুপরিচিত অনেক কনটেন্ট ক্রিয়েটর রয়েছেন, যারা মূলত এখান থেকেই নিজেদের ভিডিও এর জন্য মিউজিক বা অডিও ট্র্যাক ডাইনলোড করে থাকেন।
ওয়েবসাইটের ঠিকানা: https://soundcloud.com
— শেষ কথা —
এখানে উল্লেখিত প্রতিটি ওয়েবসাইটই সুপরিচিত এবং বিশ্বস্ত। এগুলোর বাইরে নতুন কোনো কপরাইট ফ্রি মিউজিক ডাউনলোড করার সাইট থেকে মিউজিক ডাউনলোডকালে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করবেন।
ডাউনলোডের আগে অবশ্যই সেই ওয়েবসাইটের পলিসি পেজটা ঘুরে আসবেন। নয়তো, অনাকাঙ্ক্ষিত ঝামেলায় পড়ার সম্ভাবনা অনেকাংশে বেড়ে যাবে।
কপিরাইট ফ্রি মিউজিক নিয়ে আজকের পর আশা করি আপনাকে আর ভাবতে হবে না। এতোগুলো কপরাইট ফ্রি মিউজিক ডাউনলোড করার সাইট থেকে বেছে বেছে আপনার রুচি ও চাহিদামাফিক মিউজিক খুঁজে নিতে পারবেন এবং ভিডিওকে করে তুলতে পারবেন আরো বৈচিত্র্যমন্ডিত।
আরও পড়ুন-