বর্তমানে যারা স্মার্টফোন ব্যবহার করেন, তাদের মধ্য থেকে দিনে একবার হলেও ইউটিউব দেখেন না এমন মানুষ হয়ত খুঁজে পাওয়া যাবে না। কিন্তু কখনো কি ভেবে দেখেছেন, যে ভিডিওগুলো প্রতিদিনই দেখে চলেছেন সেগুলো কারা, কেন তৈরি করেছে? কেন এই ভিডিওগুলো তৈরি করে ইউটিউবে প্রকাশ করা হয়েছে যাতে করে আপনারা বিনমূল্যে দেখতে পারেন? আপনি জেনে আশ্চর্য হবেন- এক একটি ইউটিউব ভিডিও কিছু কিছু মানুষকে প্রচুর অর্থ উপার্জনের সুযোগ করে দিয়েছে। কিভাবে? সেই কথাই আজ আমি আপনাদের বলব!
অন্যদিকে, আমরা প্রয়োজনীয় কোন তথ্য অনলাইনে খুঁজে পেতে চাইলে করি? উত্তরটা সবারই জানা। বিভিন্ন সার্চ ইঞ্জিন যেমন- গুগল, বিং, বাইডু, ডাক ডাক গো প্রভৃতিতে সার্চ করি! গুগলে সার্চ করে প্রাপ্ত লিংক থেকে তথ্য অনুসন্ধানের জন্য যে ওয়েবসাইটে ঢুঁ মারেন, তার মালিকও যে অর্থ উপার্জন করছে আপনাকে তথ্য প্রদান করার মাধ্যমে!
কথাগুলো একটু গোলমেলে লাগছে, তাই না।
সহজভাবে বলতে গেলে, আমি যা বোঝাতে চাইছি- ব্যক্তিগত বা প্রাতিষ্ঠানিক উদ্যোগে তৈরি বা সংগ্রহ করা ইউটিউব ভিডিও বা কন্টন্ট ইউটিউব বা ব্লগিং (অনলাইনে নিজের ওয়েবসাইটে বা অন্যের অনুমতিতে তার ওয়েবসাইটে লেখালেখি করা) এর মাধ্যমে পুরো বিশ্বের সামনে তুলে ধরে অনলাইনে টাকা আয় করা যায়।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে- আমি বা আপনি কোন মাধ্যম বেছে নিব নিজের প্রতিভা প্রকাশের জন্য?
চলুন জেনে নিই যে, ইউটিউব না ব্লগিং – কোনটি হবে আপনার জন্য অধিক লাভজনক?
ইউটিউব থেকে আয়ের উপায়
সার্চ ইঞ্জিন জায়ান্ট গুগলের মালিকানাধীন ইউটিউব হলো এমন একটি মাধ্যম যেখানে প্রতিদিন গড়ে ৫ মিলিয়ন ভিউ হয় এবং প্রতি মিনিটে গড়ে ৩০০ মিনিট ভিডিও আপলোড হয়। যত বেশি ভিউ, তত বেশি আয়।
ইউটিউব চ্যানেলগুলো যেসব মাধ্যম থেকে আয় করে সেগুলো হলো –
- গুগল এডসেন্স
- অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং
- স্পন্সর
ইউটিউবে ভিডিও আপলোড করার জন্য ইউটিউব কর্তৃপক্ষকে কোন ধরনের টাকা দিতে হয় না। ইউটিউব আনলিমিটেড স্টোরেজ ফ্রি দিয়ে থাকে। কিন্তু ইউটিউবের নিয়ম না মানলে যেকোন সময় চ্যানেল সাসপেন্ড হতে পারে।
ভিডিও তৈরি এবং এ্যাডিটিং করার জন্য সে বিষয় সম্পর্কে জ্ঞান রাখতে হবে। নিয়মিত ভিডিও তৈরি করতে হবে। তাহলে ভিউ বাড়বে। কোনো ধরনের নকল বা কপি কন্টেন্ট দিয়ে চ্যানেল থেকে আকাঙ্ক্ষিত আয় করা যাবেনা।
সাধারণত বিজ্ঞাপন ভিউ ও ক্লিকের উপর ভিত্তি করে গুগল টাকা দিয়ে থাকে। ভিডিও যেহেতু একবার বানিয়ে দিয়ে দেওয়া হয়, তাই সংশোধন করতে গেলে আবার পুরো ভিডিও এডিট করতে হয়। তা যেমন সময় সাপেক্ষে তেমনি কষ্টসাধ্য। বার বার ভিডিওর ঐ সম্পাদনার স্থান খুঁজতে হবে এবং পরিবর্তন করতে হবে।
ব্লগ তৈরি করে আয় করার নিশ্চিত উপায়
ব্লগে আর্টিকেল প্রকাশের মাধ্যমে দীর্ঘদিন আয় করা যায়। যে আর্টিকেল লিখে তাকে ব্লগার বলে। এটি বর্তমানে একটি জনপ্রিয় মাধ্যম। প্রতিদিন যাদের সাইটে গড়ে ১০০০ ভিজিটর থাকে তারা বিভিন্ন মাধ্যম থেকে আয় করতে পারে।
ব্লগ থেকে টাকা আয়ের বিভিন্ন উপায়সমূহ-
- গুগল এডসেন্স
- অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং
- অ্যাড প্রদর্শণ
- স্পন্সর আর্টিকেল প্রকাশ করা
একজন ব্লগার ব্যক্তিগতভাবে ব্লগিং করতে চাইলে ব্লগস্পট এ বিনামূল্যে নিজের ব্লগসাইট খুলতে পারে। প্রফেশনাল ব্লগিং এর ক্ষেত্রে ডোমেইন, হোস্টিং কিনে ব্লগিং করা আবশ্যক হয়।
ব্লগিং যেহেতু পুরোপুরি লেখার কাজ তাই বারবার সংশোধন করার খুব ভালো সুযোগ থাকে। কেননা একবার কোন তথ্য দিলে ওটা পরবর্তীতে সময়ের প্রয়োজনে পরিবর্তন করা লাগতে পারে। যেমন, আপনি যদি পণ্য বিক্রি করেন, সেক্ষেত্রে বিভিন্ন সময় অফার বা ছাড় দিতে হয় এবং একটি নিদির্ষ্ট সময় পর তা সরিয়ে ফেলতে হয়।
ব্লগিং এর জগতে অনলাইনে প্রকাশিত তথ্য, উপাত্ত যে কোন সময়, অবস্থান ও পরিবেশে সংশোধন ও পরিবর্তন খুবই সহজ।
আরও পড়ুন –
ইউটিউব না ব্লগিং – আপনার নির্বাচিত মাধ্যমের প্রতিযোগীতা কোথায় কেমন?
কোন মাধ্যমে নিজেকে উপস্থাপন করতে চান? সেখানে আপনার বিষয়ের মত আরো কেউ ভাবছে কিনা বা করছে কিনা চিন্তা করতে হবে।
আপনাকে এমন বিষয় বাছাই করতে হবে যা অন্যদের চেয়ে কিছুটা আলাদা। এতে করে আপনার ব্লগ বা ইউটিউব চ্যানেলে অনেক বেশি দর্শক আসবে।
যেমন কোন পণ্য বিক্রি করতে চাইলে আপনি ব্লগিং বেছে নিবেন। কারন সেখানে অনেক পণ্য একসাথে সাজিয়ে দিতে পারবেন যার বর্ণনা দেখে ক্রেতা আগ্রহ পাবে।
কিন্তু ইউটিউবে প্রতিটা পণ্য বা অনেক গুলো পণ্য একসাথে করে ভিডিও বানালে তা অনেকটাই একঘেয়ে হয়ে যায়। আর ক্রেতার কাছে অনেক ধরনের পণ্যের ভেতর থেকে পছন্দ করা সম্ভব হয় না, কিন্তু ব্লগিং -এ তা খুবই সহজভাবে করা সম্ভব।
ইউটিউব ভিডিওর তৈরি করার সুবিধাসমূহ
যেমনটা বললাম আগে, কিছু জিনিষ ভিডিও-র মাধ্যমে উপস্থাপন করলে ভালোভাবে বোঝা যায়। কোন পণ্য ব্যবহার করে কেমন লেগেছে- ভিডিও বানালে যারা ঐ পণ্য কেনার কথা ভাবছিলেন সে পরিষ্কার ধারণা পাবে।
কিন্তু ব্লগিং এ আর্টিকেল পড়ার মাধ্যমে তা হয়ত পরিষ্কার বোঝা যেত না। আবার, একটি বিশেষ রান্না কিভাবে করতে হয় তা ভিডিও করে দেখালে তা দর্শক যতটা সহজভাবে বুঝতে পারবে, পড়ে বোঝাটা ততটাই কঠিন। তাই এসব ক্ষেত্রে ইউটিউব অবশ্যই উপযুক্ত।
নিজের বদলে অন্যের সাইট এ নিজেকে উপস্থাপন
এখানে একটি মজার বিষয় বলতে যাচ্ছি। আপনি নিজের সৃজনশীলতা বিকাশের জন্য যা তৈরি করে বা আর্টিকেল লিখার মাধ্যমে প্রচার করতে চান, ইউটিউবে বা ব্লগিং করে তা সম্ভব নিজের কোন ওয়েবসাইট বা ইউটিউব চ্যানেল না থাকা সত্ত্বেও!
যেমন, আপনি নিজের পণ্য বিক্রি করতে চান। তবে তা নিজের ওয়েবসাইটে করার সাহস পাচ্ছেন না। তাহলে এমন কিছু ব্লগিং সাইট আছে যারা নির্দ্বিধায় তাদের ব্লগ বা ওয়েবসাইটে আপনার পণ্য তুলে ধরার সুযোগ করে দিবে। এতে যে পরিমাণ আয় হবে তার একটি নিদির্ষ্ট অর্থ নিজেরা রেখে বাকিটা আপনার হাতে তুলে দিবে।
এতে আপনার পণ্য যেমন আপনার টার্গেটেট দর্শকের কাছে সমাদৃত হল তেমনি তা আবার প্রকাশের জন্য নিজের ব্লগেরও প্রয়োজন হল না।
আবার, কারো ভেতরে সাংবাদিকতার শখ বা এই পেশায় যুক্ত হবার ইচ্ছা থাকে। সেক্ষেত্রে তার কিছু সংবাদ বা কোন নির্দিষ্ট বিষয় নিয়ে তৈরি করা বিশ্লেষণমূলক পর্যালোচনা বিভিন্ন সংবাদ বিষয়ক ব্লগে লিখে বা প্রকাশ করে মানুষকে জানানোর সুযোগ হয়। পাশাপাশি এতে করে কিছু আয় করার সম্ভাবনাও থাকে।
এক্ষেত্রে ইউটিউবে সাধারণত এরকম কোন ধরনের সুযোগই নেই। আপনাকে অবশ্যই নিজের একটি ইউটিউব চ্যানেল থাকতে হবে নিজের ভিডিও সকলের সামনে তুলে ধরার জন্য।
তাই নিজের ইচ্ছা এবং ধারণা থাকলেও নিজস্ব ইউটিউব চ্যানেল না থাকার কারণে অনেকে কিছুই করতে পারছেন না। তাই যারা একদম শুরু থেকে অল্প অল্প করে কাজ করছেন তাদের জন্য অন্যের সাইটে কাজ করে অভিজ্ঞতা অর্জন করার জন্য ইউটিউবের চেয়ে ব্লগিং সুবিধাজনক।
ইউটিউব ও ব্লগিং করে আয় করার জন্য কি কি পদক্ষেপ নেয়া প্রয়োজন?
একদম নতুন যারা; তাদের অবশ্যই ব্লগিং বা ইউটিউবিং সম্পর্কে প্রাথমিক ধারণাটুকু নিতে হবে। তবে যাদের এই ব্যাপারে কিছু হলেও অভিজ্ঞতা আছে, তাদের জন্য বলব- ইউটিউব সবচাইতে ভালো হবে।
যদি ইউটিউব ভিডিও তৈরি করে আয় করতে ইচ্ছুক হয়ে থাকেন, তবে আপনাকে ইউটিউবে একটি একাউন্ট তৈরি করে নিতে হবে। আপনি খুব সহজেই আপনার জিমেইল বা গুগল একাউন্ট ব্যবহার করে ইউটিউবে একটি একাউন্ট তৈরি করে নিতে পারবেন।
কিভবে ইউটিউব ভিডিও তৈরি করতে হয় সে সম্পর্কে পরিষ্কার জ্ঞান ও দক্ষতা থাকা প্রয়োজন। সর্বোপরি ভিডিও সম্পাদনা করার পদ্ধতি, ইউটিউবে আপলোড করা ও তা প্রচার করার জন্য আনুসঙ্গিক কাজগুলো ভালোভাবে জানতে হবে।
এছাড়া অল্প কিছু সার্চ ইঞ্জিন অপ্টিমাইজেশনের কাজ করে আপনার ইউটিউব ভিডিওগুলো সার্চ ইঞ্জিন ও ইউটিউবের প্রথম পাতায় নিয়ে আসা সম্ভব হলে ইউটিউবের মাধ্যমে প্রচুর টাকা আয় করা খুবই সম্ভব।
ব্লগিং করে আয় করার জন্য করণীয়
তবে ব্লগিং করে আয় করাটা কিছুটা কঠিন ও সময় সাপেক্ষ। কারণ কিছু ব্লগিং প্ল্যাটফর্মে নিজেদের এসইও করে নিতে হয় যা নতুনদের জন্য অনেকটাই সহজসাধ্য নয়।
নিজের কাজে অন্যদের নিতে চাইলে কি করবেন?
অনেক সময় নিজের কাজে সাহায্য করার জন্য লোকবল দরকার হয়। কারণ, হাতের কাজ যখন বেশি হয়ে যায় তখন একার পক্ষে সব কাজ সঠিক সময়ে করা সম্ভব হয়ে ওঠে না।
ব্লগে সহজেই অন্যদের লেখা এবং সাহায্য কাজে লাগানো যায়। যেহেতু সম্পূর্ণ ব্লগিং প্লাটফর্ম প্রকাশকের কাছে থাকে তাই নিজের ইচ্ছা মত প্রয়োজন অনুসারে মানুষ কাজে লাগাতে পারেন।
তবে, ইউটিউবে এই সুবিধা থেকে বঞ্চিত হবেন আপনি। আপনার ইউটিউবের একটি বিশাল অংশ নিয়ন্ত্রণে থাকে ইউটিউব কর্তৃপক্ষের। তাই নিজের ইচ্ছা মত ভিডিও দিতে পারবেন না বা কাউকে যোগ করতে পারবেন না আপনার ইউটিউব চ্যানেলের সাথে।
কি কি সরঞ্জাম লাগতে পারে?
আপনি বাসায় বসে বসেই ব্লগিং এবং ইউটিউবিং করবেন। বাইরে কোথাও যাবার প্রয়োজন নেই। তাই যন্ত্রপাতি যা লাগবে বাসার ভিতরেই এবং অল্প কিছু সরঞ্জাম থাকলেই হবে।
ব্লগিং করতে প্রয়োজন হবে শুধু একটি কম্পিউটার, আপনার সৃজনশীল চিন্তা-ভাবনা এবং অল্প কিছু বিনিয়োগ। এই তিনটি জিনিস থাকলেই আপনি ব্লগ শুরু করতে পারবেন। চাইলে আপনি মোবাইল দিয়েও লেখার কাজটা করতে পারেন। তাহলে বুঝতেই পারছেন- হাতের কাছের ইলেক্ট্রনিক যন্ত্র যা প্রতিনিয়ত ব্যবহার করি তা দিয়েই কাজ করা যাবে।
আরও পড়ুন –
ইউটিউবে আপনার নিজেকে সুন্দরভাবে উপস্থাপন করা অনেক জরুরি। নাহলে দর্শক আপনার ভিডিও দেখতে আসবে না। তাই প্রথমই প্রয়োজন ভালো মানের ক্যামেরা। চাইলে মোবাইল দিয়েও কাজ করতে পারেন। কিন্তু তার কোয়ালিটি ততটা মানসম্পন্ন হবে না। পাশাপাশি দরকার হবে- মাইক্রোফোন এবং ভিডিও এডিট করার কিছু নিদিষ্ট সফটওয়্যার। এই সরঞ্জামাদি কেনার খরচটাও কিন্তু আপনাকেই বহন করতে হবে।
সর্বোপরি, ইউটিউব অনেকটাই ব্যয়বহুল।
নিজেকে ভালোভাবে প্রকাশ করতে পারবেন কোথায় – ইউটিউব না ব্লগ প্লাটফর্মে
অনেকে ছোট থেকে একটু লাজুক প্রকৃতির হন। আবার কেউ সকলের সাথে সহজেই মিশে যেতে পারেন এবং ভীড়ের মধ্যে থেকেই নিজেকে পরিপূর্ণভাবে উপস্থাপন করতে পারেন।
তাই আপনি কেমন আর কি করতে চাচ্ছেন তার উপর নির্ভর করবে কোন মাধ্যম বেছে নিবেন। যারা একটু আড়ালে থেকে কাজ করতে পছন্দ করেন এবং নিজেকে চেহারা নয় কাজের মাধ্যমে ফুটিয়ে তুলতে চান, ব্লগিং তাদের জন্য একদম উপযুক্ত মাধ্যম।
কারণ, এখানে আপনাকে মানুষ জানবে একটি নাম হিসেবে যার প্রদত্ত তথ্য কোন না কোনভাবে কাজ লাগছে তাদের জীবনে। আপনাকে ব্যক্তিগতভাবে চেনার কোন সুযোগ নেই।
এমনও হতে পারে, আপনার সহপাঠী বা সহকর্মী আপনার ব্লগ থেকে পণ্য কিনছেন কিন্তু তিনি জানেনই না আপনি তাকে পছন্দের পণ্যটি সরবরাহ করছেন।
এভাবে নিজে না চাইলে পরিচয় লুকিয়ে কাজ করে যেতে পারেন।
ইউটিউবে তা সম্পূর্ণই উল্টো। সকলের সামনে আপনি স্ব শরীরে এসে কথা বলছেন। অবশ্যই যারা ক্যামেরার সামনে আসতে পছন্দ করেন তাদের জন্য ইউটিউব একদম সঠিক মাধ্যম।
তাই আপনি কি করতে চান তার উপর নির্ভর করবে ইউটিউব না ব্লগিং। কারণ এক্ষেত্রে দুইটিই প্রয়োজনভেদে উপযুক্ত।
কোথায় পাওয়া যাবে পাঠক বা শ্রোতা
আপনি ব্লগিং করুন বা ইউটিউবিং, কেউ আপনার কাজ সম্পর্কে জানতে না পারে তাহলে কোন লাভ হবে না। তাই আপনার দর্শক আপনাকেই খুঁজতে হবে।
যেমন, আপনি সৌন্দর্য্য বর্ধনকারী পণ্য বা জামাকাপড় বিক্রি করতে চান। তাহলে আপনাকে যেতে হবে ফেসবুক। কারণ মানুষ ফেসবুকে এসব পণ্য খুঁজে থাকে। সেখানে আপনার ব্লগের শেয়ার করা আর্টিকেল উনার নজরে আসলে তা অনুসরণ করে দেখলে উনি উপকৃত হবেন এবং আরো মানুষকে হয়ত উৎসাহিত করবেন। এভাবে আপনি পরিচিতি পারেন।
আবার মেক-আপ ভিডিও বানালে তার জন্য দর্শক খুঁজতে হবে ইন্সটাগ্রাম বা পিন্টারেস্টে। এভাবেই আপনি আপনার দর্শকের কাছে পৌছাবেন এবং তারা আপনার কথা জানবে ও শুনবে।
তাই কোথায় কাজ করবেন তার চেয়ে বড় ব্যাপার কিভাবে ও কোথায় নিদির্ষ্ট শ্রোতা বা পাঠক পাবেন। যেমন ভিডিও ফেসবুকে দিলে সাড়া পাবেন, কিন্তু ইন্সটাগ্রামের মত অধিক পরিমাণে পাবেন না। আবার পণ্য বিক্রয় পোস্ট ইন্সটাগ্রামের তুলনায় ফেসবুকে বেশি সাড়া পাবে।
ফেসবুক সম্পর্কিত কিছু লেখা –
কোথায় দর্শক বেশি পেতে পারেন?
ইউটিউবের তুলনায় ব্লগিং এ দর্শক তুলনামূলক কম পাওয়া যায়। তবে আপনার ডোমেইনের রেটিং এবং বয়স যদি বেশি হয় তাহলে হয়ত পাঠক পেতে খুব একটা সমস্যা হবেনা।
যদি আপনার বিষয়বস্তু অন্যরকম এবং মানসম্পন্ন তথা ইউনিক হয় এবং অনলাইনে তার প্রতিযোগিতা কম থাকে তাহলে সহজেই দেখা যাবে আপনার ভিডিও একদম প্রথমেই চলে আসছে মানুষের খোঁজার তালিকায়।
সবশেষে বলা যায়, ব্লগিং বা ইউটিউব কোনটি ভালো বা লাভজনক তা আসলে এভাবে বলা যায় না। আপনার প্রয়োজন, পছন্দ, বিষয়বস্তু, দরকারি সরঞ্জাম ইত্যাদি বিভিন্ন বিষয়ের উপর নির্ভর করে। যেমন- পোশাক বিক্রয়ের জন্য ব্লগ যেমন উপযোগী, তেমনি ইলেক্ট্রনিক যন্ত্র বিক্রি করার জন্য ইউটিউব উপযোগী।
এভাবেই আপনার পছন্দ অনুযায়ী বেঁছে নিবেন অনলাইন মাধ্যম। ফলে, সহজেই বাসায় বসে সারাদিনের কাজ থেকে একটু অবসর সময় বের করে তৈরি করে ফেলতে পারেন নিজের ব্লগ বা ভিডিও। ইউটিউব ও ব্লগ দুই ক্ষেত্রেই প্রয়োজন ধৈর্য্য, শ্রম, সময় এবং তার যথার্থ ব্যবহার। তবেই আসবে সাফল্য ও আর্থিক স্বনির্ভরতা।