অনলাইনে আয় করার কথা ভাবছেন। ইন্টারনেটে একটু খুঁজলে এ সম্পর্কিত অনেক তথ্য সমৃদ্ধ লেখা খুঁজে পাবেন। আমি আর নতুন করে কি বলব বলুন? সবাই শুধু জানতে চায়। জানতে চাওয়াটা যৌক্তিকও বটে। তবে শুধু জানতে চাইলেই সব কাজ শেষ হয়ে যায়? যা কিছু জানলেন তা বাস্তবায়ন করার ঐকান্তিক ইচ্ছা থাকতে হবে এবং সেই অনুযায়ী পরিশ্রম করে যেতে হবে। তবেই না আসবে সাফল্য।
এবার আসি মূল প্রসঙ্গে।
কিভাবে অনলাইনে আয় করা যায়?
অনেকগুলো সহজ পদ্ধতি আছে। তবে অনলাইনে আয় করার সহজ উপায় বা পদ্ধতি অনুসরণ করলে প্রাথমিকভাবে আয় হবে কম। এবং কিছুটা অনিশ্চিত ও বটে।
তবে ধৈর্য ধরে নিজের সৃজনশীলতাকে কাজে লাগিয়ে কাজ করে যেতে পারলে একটা সময়ে নিশ্চিত ভাবেই প্রতি মাসে অন্তত ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকা অনায়াসেই আয় করতে পারবেন।
নিচে তেমন ২টি সহজ পদ্ধতি সম্পর্কে সংক্ষেপে আলোচনা করা হয়েছে।
ফেসবুকে পণ্য বিক্রি করে আয়
আপনার যদি ফেসবুকে একটি একাউন্ট থাকে তবে আপনি ইচ্ছে করলে একটি ফেসবুক পেজ তৈরি করে সেখানে নিজের তৈরি করা পণ্য অথবা অন্য কোন প্রতিষ্ঠানের পণ্য বিক্রি করে আয় করতে পারবেন।
অর্থাৎ, একটু চেষ্টা করলেই নিজের একটি ফেসবুক পেজকে ই-কমার্স সাইট হিসেবে ব্যবহার করা সম্ভব।
এর জন্য আপনি ফেসবুক শপ অ্যাপটি বিনামূল্যে ব্যবহার করতে পারবেন।
এই অ্যাপটি যেকোনো ফেসবুক ব্যবহারকারীকে তার ফেসবুক পেজে নির্বাচিত পণ্য সঠিকভাবে প্রদর্শন, মূল্য নির্ধারণ ও পেমেন্ট প্রসেসিং বিষয়ক সুবিধা প্রদান করে।
আপনি এই অ্যাপটি ব্যবহার না করেও তা পারবেন।
তবে এক্ষেত্রে প্রতিটি পণ্যের জন্য আপনাকে আলাদা করে একটি নতুন পোস্ট তৈরি করে সেখানে তার মূল্য ও টাকা পরিশোধের পদ্ধতি উল্লেখ করে দিতে হবে।
ফেসবুক ব্যবহার করে অনলাইনে আয় করার সহজ উপায় সমূহ বর্তমানে প্রচুর জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।
কেননা এর মাধ্যমে যে কোন ব্যক্তি নতুন একটি ব্যবসা বা আয়ের মাধ্যম তৈরি করার জন্য অতিরিক্ত একটি টাকা ব্যয় না করেই নিজের বাড়িতে বসে খুব সহজেই অনলাইনে আয় করতে পারছেন।
অথবা, আপনি আপনার চলমান ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের পরিসর বৃদ্ধি করার জন্য বা অনলাইনে ব্যবসার বিস্তৃতি ঘটাবার জন্যেও এই মাধ্যমটি ব্যবহার করতে পারবেন।
শুরুটা কিভাবে করবেন?
প্রাথমিকভাবে নিজের পরিচিত আত্মীয় স্বজন ও বন্ধু-বান্ধবদের মধ্যে আপনার পণ্যের প্রচার ও বিক্রি করার চেষ্টা করুন।
এবং তাদের মাধ্যমে নতুন গ্রাহক তৈরি করার জন্য বন্ধুদের ফ্রেন্ডলিস্টে আপনার পণ্যের তথ্য সম্পর্কিত পোস্টটি শেয়ার করার জন্য তাদের অনুরোধ করতে পারেন।
আপনি যে বিষয়ে অনলাইনে ব্যবসা করতে ইচ্ছুক সেই বিষয় সংশ্লিষ্ট গ্রুপ তৈরি করুন এবং তাতে আপনার পণ্যের প্রচার করুন।
অবশ্যই পণ্য সম্পর্কিত সঠিক তথ্য সবার সম্মুখে আকর্ষণীয়ভাবে উপস্থাপন করার চেষ্টা করবেন যাতে করে অন্যরা আপনার পণ্যের তথ্য যুক্ত পোস্টটি পড়ে দেখতে উদ্বুদ্ধ হয় ও কিনতে আগ্রহী হয়ে উঠে।
প্রয়োজন মনে হলে ফেসবুক মার্কেটিং সম্পর্কিত নিচের লেখাটি পড়ে দেখতে পারেন-
ফেসবুক মার্কেটিং করে সফল হবার কিছু টিপস
আপনি ইচ্ছে করলে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং বা রেফার আ ফ্রেন্ড ক্যাম্পেইন এর সাথে যুক্ত হয়ে ফেসবুকে কোন প্রতিষ্ঠিত কোম্পানির সেবা বা পণ্যের প্রচার করে এবং তা বিক্রি করার মাধ্যমে বিক্রিত পণ্যের একটি নির্দিষ্ট অংশ কমিশন গ্রহণ করে আয় করতে পারবেন।
অনলাইনে লেখালেখি করে আয়
আপনি হয়তো এ বিষয়ে ইন্টারনেটে বিভিন্ন ওয়েবসাইট বা ব্লগে অনেক লেখা দেখেছেন, পড়েছেন এবং পড়া শেষে অনলাইনে লেখালেখি করে আয় করার পদ্ধতিগত জটিলতাগুলো অবগত হয়ে পরমুহূর্তেই তা ভূলেও গিয়েছেন।
এটাই স্বাভাবিক। কেননা আমরা সাধারণত জটিলতা পছন্দ করিনা।
অনলাইনে লেখালেখি করে আয় করার উপায় খুঁজতে গিয়ে অনেকেই হয়তো বিভিন্ন ওয়েবসাইটের ঠিকানা খুঁজে পেয়েছেন।
যেখানে কোন নির্দিষ্ট বিষয়ের উপর লিখতে বলা হয়। আপনি তাদের ওয়েবসাইটে সাইন আপ করে নির্ধারিত বিষয়ে লিখে জমা দিলে অতঃপর তাদের মান যাচাইয়ের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলে তবেই আপনি হয়তোবা কিছু পাবার আশা করতে পারেন।
মান যাচাইয়ের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ না হলে কিছুই পাবেন না।
অর্থাৎ সম্পূর্ণ পরিশ্রমটাই বিফলে যাবে।
সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে উপরে উল্লেখিত ধরনের ওয়েবসাইটগুলোতে শুধুমাত্র ইংরেজিতে লিখতে হবে।
এবার আপনিই বলুন- এতো ঝামেলায় জেনেশুনে কেবা জড়াতে চাইবে।
তবে উপায় কি?
প্রাসঙ্গিক লেখাটি পড়ে দেখতে পারেন-
আর্টিকেল লিখে অনলাইনে আয় করার নিশ্চিত উপায়
উপায় অবশ্য একটা আছে বৈকি!
Medium.com
এখানে বিনামূল্যে একাউন্ট তৈরি করে আপনি আপনি আপনার পছন্দনীয় বিষয়ের উপর নিয়মিত গল্প লিখতে থাকুন।
এখানে উল্লেখ্য যে, মিডিয়াম.কম লেখকদের জন্য তৈরি করা একটি প্লাটফর্ম। এখানে আপনি স্বাধীনভাবে তাদের সহজ গাইডলাইন অনুসরণ করে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে যত খুশি আর্টিকেল প্রকাশ করতে পারবেন। যা কিনা মিডিয়াম এর পরিভাষায় স্টোরিজ নামে অভিহিত করা হয়।
মিডিয়াম.কম ব্যবহার করে কিভাবে অনলাইনে আয় করা যায়?
এই মাধ্যম ব্যবহার করে আপনি দুই ভাবে টাকা আয় করতে পারবেন।
১। আপনি তথ্য সমৃদ্ধ মানসম্মত লেখা প্রকাশ করে সেই লেখাতে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিংয়ের মাধ্যমে আয় করতে পারবেন।
মিডিয়াম.কম একটি হাই ডোমেইন অথরিটি (DA = 94) সমৃদ্ধ সাইট হবার কারণে তাতে প্রকাশিত আর্টিকেল খুব দ্রুত গুগল সার্চ রেজাল্টের প্রথম পাতায় চলে আসে।
আপনি ঠিক এই সুবিধাটি নেয়ার জন্য আপনার সেরা লেখাগুলো মিডিয়াম.কম এ প্রকাশ করুন। তাতে নিজের অথবা অ্যাফিলিয়েট পণ্যের প্রচার করে তা বিক্রির মাধ্যমে প্রচুর টাকা আয় করতে পারবেন।
২। মিডিয়াম পার্টনার প্রোগ্রামে যুক্ত হয়ে আয় করা
আপনার আর্টিকেল লেখার হাত যদি ভালো হয়। অর্থাৎ আপনি যদি ইংরেজিতে ভালো মানের আর্টিকেল লিখতে সক্ষম হয়ে থাকেন তবে মিডিয়াম পার্টনার প্রোগ্রামে যোগদান করে খুব সহজেই প্রচুর টাকা উপার্জন করতে পারবেন।
এক্ষেত্রে আপনাকে কিউরেটর গাইডলাইন অনুসরণ করে নিয়মিত ভালো আর্টিকেল প্রকাশ করে যেতে হবে। এবং সেগুলো মিডিয়াম পেস্কেল স্টোরিজ এর অন্তর্ভুক্ত করে প্রকাশ করতে হবে।
এতে করে আপনার লেখা মিডিয়াম কিউরেটরদের দ্বারা নির্বাচিত হলে তা মিডিয়াম এর বিষয়ভিত্তিক নির্বাচিত লেখার বিলবোর্ডে স্থান পাবে।
ফলশ্রুতিতে আপনার লেখা মিডিয়াম এর কোন পেইড মেম্বার পড়লে সে ঠিক কতটা সময় নিয়ে আপনার লেখাটি পড়েছে তার উপর ভিত্তি করে আপনাকে টাকা প্রদান করা হবে।
এছাড়া আপনার লেখা অন্য কোনো মাধ্যমে যেমন- গুগল সার্চ, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম, ইমেইল নিউজলেটার প্রভৃতি রেফারেন্স এর মাধ্যমেও যদি কোন পেইড মেম্বার পড়ে থাকেন তাহলেও ঠিক একই পদ্ধতিতে আপনি টাকা পাবেন।
এ বিষয়ে আরো জানতে মিডিয়াম.কম এ আমার পাবলিকেশন Airy Passion এ প্রকাশিত লেখাগুলো পড়ে দেখতে পারেন।
আজ এ পর্যন্তই।
লেখাটি পড়ে ভালো লাগলে অবশ্যই শেয়ার করে অন্যদের পড়ার সুযোগ করে দেবেন।
কিছু জানার থাকলে কমেন্ট করে জিজ্ঞেস করুন। আশা করি দ্রুত উত্তর পাবেন।
Featured Photo by Giorgio Trovato on Unsplash