অর্থ উপার্জন বলতে এর আগে শুধু চিরচেনা চাকরি বা ব্যবসা-বাণিজ্যকেই বোঝানো হত। প্রযুক্তির কল্যাণে আর ইন্টারনেটের ব্যাপক বিস্তারের ফলে চাকরি বা ব্যবসা-বাণিজ্যের বড় একটা অংশ অনলাইন ভিত্তিক হয়ে গেছে। যার ফলে ঘরে বসেই অনলাইনে টাকা ইনকাম করার সহজ উপায় বাংলাদেশে তৈরি হয়েছে এবং ভবিষ্যতে আরো হবে। আজকের আলোচনায় ঘরে বসেই অনলাইনে আয় করার সহজ ১০টি উপায় সমূহ বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।
প্রতিনিয়তই নতুন নতুন মানুষ আগ্রহী হচ্ছেন অনলাইনে আয়ের দিকে। কিন্তু অনেকেই জানেন না কীভাবে অনলাইনে ইনকামের শুরুটা করতে হবে। যার ফলে অনলাইনে প্রতারিত হওয়া কিংবা পরিশ্রমের যথাযথ ফলাফল না পাওয়ার মতো ঘটনা ঘটতে পারে। ফলে অনলাইনে আয়ের প্রতি মানুষ উদ্যম হারিয়ে ফেলে।
একবার শুরুটা করতে পারলে তারপর নিজেই টাকা আয় করার নানা পথ পেয়ে যাবেন। তাই, আপনার পথের সঙ্গী হতে আজকের লেখাটি অনলাইনে আয়ের কিছু প্রচলিত ও জনপ্রিয় পদ্ধতি নিয়ে।
১০টি অনলাইনে ইনকাম করার সহজ উপায়
বর্তমানে অনেকেই অনলাইনে কাজ করে নিজেদের জীবিকা নির্বাহের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ আয় করছেন। বাংলাদেশেও দিনদিন জনপ্রিয় হচ্ছে অনলাইনে কাজ করে টাকা আয়ের বিষয়টি।
অনেকেই আছেন যারা প্রতি মাসে হাজার থেকে শুরু করে লাখ-লাখ টাকা পর্যন্ত অনলাইনে আয় করে থাকেন।
এসব কাজের মধ্যে স্কিল বেজড কঠিন কাজ যেমন রয়েছে, তেমনি অনলাইনে আয় করার সহজ উপায়ও অবশ্যই রয়েছে। তাই আমাদের আজকের আলোচনায় থাকছে- ১০টি অনলাইনে টাকা ইনকাম করার সহজ উপায় বাংলাদেশে।
১. ব্লগিং করে অনলাইনে ইনকাম করার উপায়
ব্লগিং বহু বছর ধরেই অনলাইনে আয়ের বেশ জনপ্রিয় একটি মাধ্যম। ২০২৩ সালে এসেও ব্লগিংয়ের জনপ্রিয়তার কমতি পড়েনি। ব্লগিংয়ের জন্য দরকার একটি ওয়েবসাইট ও ভালো মানের লেখা। বর্তমানে ওয়ার্ডপ্রেস ব্যবহার করে খুব সহজেই ওয়েবসাইট তৈরি করে অনলাইনে আয় করা যায়।
ওয়েবসাইট তৈরির জন্য প্রথমে আপনার সাইটের ‘নিশে বা Niche’ নির্বাচন করুন, অর্থাৎ আপনি কী বিষয়ের ওপর লেখা দিতে চাচ্ছেন তা নির্বাচন করুন।
অনেক সাইটে দেখা যায় একাধিক বিষয়ের ওপর কনটেন্ট থাকে। এগুলো হচ্ছে মাল্টি নিশে ওয়েবসাইট। শুরুতে একটি নিশের ওপরে সাইট করাই ভালো। নিশ পছন্দ করার ক্ষেত্রে আপনার আগ্রহ আছে এমন বিষয় নির্বাচন করা উচিৎ। তাহলে দীর্ঘদিন কাজ করতেও একঘেয়েমি লাগবে না।
এরপরে একটি ডোমেন নেম ও হোস্টিং কিনতে হবে। এরপরে ওই নিশের বিভিন্ন ভালো মানের কনটেন্ট দিতে হবে এবং সেই সাইটে সার্চ ইঞ্জিন থেকে ভিজিটর বা পাঠক নিয়ে আসার জন্য সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন বা এসইও করার মাধ্যমে সাইটকে গুগল সার্চে র্যাংক করাতে হবে।
কনটেন্ট নির্ভুল ও মানসম্মত হওয়া জরুরি। আর হ্যাঁ, অন্য কোনো সাইট থেকে কপি করা যাবে না, সেক্ষেত্রে বরং আপনার সাইট নানা ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হবে। আপনি চাইলে ফেসবুক বা অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে শেয়ার করেও ভিজিটর নিতে পারেন।
এরপর আপনার সাইট প্রয়োজনীয় শর্ত পূরণ করলে অ্যাডসেন্স বা ইজোয়িক এর জন্য অ্যাপ্লাই করে নিন। অ্যাপ্রুভড হলে সাইটে বিজ্ঞাপন প্রদর্শন শুরু হবে।
এসব বিজ্ঞাপন প্রদর্শনের জন্য পেজভিউ / ভিজিট এর উপর ভিত্তি করে যেমন টাকা পেতে পারেন, তেমনি কেউ ওই বিজ্ঞাপনে ক্লিক করলে আরো বেশি টাকা পাবেন।
এ তো গেল বিজ্ঞাপন। বিজ্ঞাপন ছাড়াও অন্যান্য বিভিন্ন উপায় আছে ব্লগ থেকে আয় করার। যেমন- স্পন্সরড পোস্ট, ব্যাকলিংক বিক্রি, ই-বুক বিক্রি ইত্যাদি।
ব্লগিং শেখার উপায়
ব্লগিং শেখার জন্য অনলাইনে প্রচুর ফ্রি রিসোর্স আছে। গুগলে সার্চ দিলেই অনেক টিপস পাবেন। ইউটিউবে “Income School, Create and Go” ইত্যাদি চ্যানেল থেকে ব্লগিংয়ের নানা দিক সম্পর্কে শিখতে পারবেন।
২. ইউটিউবিং করে অনলাইনে আয় করার উপায়
গত কয়েক বছরে ইউটিউবের জনপ্রিয়তা ব্যাপকভাবে বেড়েছে। আজকালকার তরুণদের বিনোদন কিংবা শিক্ষা- দুয়েরই একটা বড় মাধ্যম হচ্ছে ইউটিউব।
ইউটিউবের সাথে আমাদের পরিচিতি বেশি থাকায় অনলাইনে আয় করার সহজ উপায় সমূহের মাঝে আপনার কাছে সবচেয়ে সহজতম মনে হতে পারে।
ইউটিউব থেকে টাকা আয় করার জন্য ইউটিউবে একটি চ্যানেল খুলতে হয়। ইউটিউবে চ্যানেল খোলা খুবই সহজ। ইউটিউব যেহেতু গুগলের মালিকানাধীন, তাই একটি গুগল অ্যাকাউন্ট (জিমেইল) থাকলেই আপনি ইউটিউব চ্যানেল খুলতে পারবেন।
ইউটিউবে চ্যানেল খোলার পরে যেকোনো বিষয়ের ওপর মানসম্মত ভিডিও তৈরি করে আপলোড করতে হবে। শুরুতেই দামি ক্যামেরা কিংবা দামি স্টুডিও সেটআপের দরকার নেই।
আপনার হাতের কাছে যা আছে তাই দিয়ে শুরু করুন। আজকালকার ফোনগুলোর ক্যামেরা বেশ ভালো এবং প্রাথমিকভাবে ভিডিও বানানোর জন্য যথেষ্ট।
চ্যানেলে এক হাজার সাবস্ক্রাইবার ও চার হাজার ঘণ্টা ওয়াচটাইম পূর্ণ হলে আপনি পার্টনার প্রোগ্রাম অর্থাৎ অ্যাডসেন্স এর জন্য অ্যাপ্লাই করতে পারবেন।
প্রাথমিকভাবে এই শর্ত পূরণ করা অনেকটাই কষ্টসাধ্য। কিন্তু লেগে থাকার মানসিকতা থাকলে অসম্ভব না। নির্দিষ্ট একটি ক্যাটাগরির ভিডিও তৈরি করুন এবং নিয়মিত ভিডিও আপলোড করুন।
শুরুর দিকে প্রতি সপ্তাহে দু’টি বা তিনটি ভিডিও আপলোড করা ভালো। ধারাবাহিকভাবে মান বজায় রেখে ভিডিও বানাতে থাকলে সফলতা আসবেই।
অ্যাডসেন্স এপ্রুভড হয়ে গেলে আপনার ইউটিউব ভিডিও’র আগে-পরে বা মাঝে দেখানো বিজ্ঞাপনের জন্য টাকা পাবেন।
ইউটিউবেও ব্লগিংয়ের মতো টাকা আয়ের বিভিন্ন পথ আছে। যেমন- স্পনসরড ভিডিও, অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং, প্রোডাক্ট প্রমোশন ইত্যাদি। এছাড়াও ইউটিউব থেকে পরিচিতি পেয়ে গেলে আপনি নিজের কোনো পণ্য বিক্রি করতে পারেন।
ইউটিউব ভিডিও তৈরি করা কিভাবে শিখব?
ইউটিউবিং শেখার জন্য বিভিন্ন ইউটিউব চ্যানেল আছে যারা সঠিক পথে ইউটিউবিং করতে শেখায়। বাংলাতে “সোহাগ ৩৬০”, “বেসিক ভাই” ইত্যাদি ছাড়াও ইংলিশে “Think Media” চ্যানেলে কিভাবে ইউটিউব ভিডিও তৈরি করতে হয়, ইউটিউব চ্যানেল বা ভিডিও এসইও করার উপায়, ইউটিউব চ্যানেল মার্কেটিং প্রভৃতি বিষয়ে নতুন ইউটিউবারদের জন্য অসাধারণ সব টিপস দিয়ে থাকে।
৩. কনটেন্ট রাইটিং করে অনলাইনে ইনকাম করার উপায়
আপনার লেখার হাত যদি ভালো হয় এবং মানুষকে যদি খুব সুন্দর ও নির্ভুলভাবে কিছু বোঝাতে পারেন তাহলে কনটেন্ট রাইটিং আপনার জন্য।
কনটেন্ট রাইটিংয়ের পরিধি বিশাল। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে- আর্টিকেল ও ব্লগ পোস্ট রাইটিং, কপিরাইটিং, সিভি রাইটিং, স্ক্রিপ্ট রাইটিং, পডকাস্ট রাইটিং, ক্রিয়েটিভ রাইটিং ইত্যাদি।
সাধারণত ব্লগ পোস্ট লেখার ক্ষেত্রে প্রতি হাজার শব্দে লেখার মান ও মার্কেটপ্লেসভেদে প্রতি হাজার শব্দের জন্য সম্মানী ৫০০ থেকে শুরু করে ৩০০০ টাকা হলেও ক্ষেত্র বিশেষে এর থেকে অনেক বেশিও হতে পারে। ভালো লেখকদের অনেকেই মাসে লক্ষাধিক টাকা পর্যন্ত আয় করে থাকেন অনলাইনে লিখে।
ফাইভার, আপওয়ার্ক ইত্যাদি ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস গুলোতে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে কনটেন্ট রাইটারদের ভালো চাহিদা রয়েছে। এছাড়াও বিভিন্ন সাইট নির্দিষ্ট কিছু বিষয় নিয়ে লেখার জন্য বেশ ভালো পরিমাণে টাকা দিয়ে থাকে। কোয়ালিটি ধরে রেখে লিখতে পারলে কনটেন্ট রাইটিংয়ে সফল হতে খুব বেশি সময় লাগবে না।
বর্তমানে বিভিন্ন সাইটে বাংলায় লিখেও বেশ ভালো টাকা আয় করা যায়।
লেখা শিখতে চাইলে প্রচুর পড়ার এবং লেখার চর্চার কোনো বিকল্প নেই। সাবলীলভাবে কোনো কিছু বোঝাতে পারা ভালো কনটেন্ট রাইটারের একটি অন্যতম গুণ।
কনটেন্ট রাইটিং শেখার উপায়
কনটেন্ট রাইটিং শেখার জন্য আপনি যেসব টপিকের ওপর লিখবেন সেসব টপিক নিয়ে প্রচুর পড়াশোনা করতে হবে। লেখার প্যাটার্ন খেয়াল করতে হবে। একই সাথে প্রাঞ্জলতা ও বৈচিত্র্য ধরে রেখে শুদ্ধ ও নির্ভুলভাবে লেখার অনুশীলন করতে হবে।
৪. গ্রাফিক ডিজাইনিং করে টাকা ইনকাম করার সহজ উপায় বাংলাদেশে
Graphic Design অনলাইনে উচ্চ পারিশ্রমিকের কাজগুলোর একটি। আপনার যদি সৃজনশীল চিন্তাভাবনা থাকে এবং ডিজাইন করতে ভালো লাগে- তাহলে গ্রাফিক ডিজাইন আপনার জন্যই।
অনলাইনে গ্রাফিক ডিজাইনারদের জন্য বিভিন্ন কাজ রয়েছে। যেমন- লোগো ডিজাইন, ফ্লায়ার ডিজাইন, ভিজিটিং কার্ড ডিজাইন, ইউজার ইন্টারফেস ডিজাইন, সোশ্যাল মিডিয়া পোস্ট ডিজাইন, ভেক্টর আর্ট, পোস্টার ডিজাইন, বুক কাভার ডিজাইন ইত্যাদি।
গ্রাফিক ডিজাইন শেখার উপায়
ইউটিউবে গ্রাফিক ডিজাইন শেখার জন্য অনেক চ্যানেল আছে যেখান থেকে ফ্রিতে অ্যাডোবি ইলাস্ট্রেটর ও অ্যাডোবি ফটোশপের কাজ শিখতে পারবেন।
How To Graphic Design, Envato Tuts+, Dom Designs, Satori Graphics – এই চ্যানেলগুলো এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য। গ্রাফিক ডিজাইনে সফলতা পাওয়ার জন্য কোনো একটি সেক্টর, হোক সেটা লোগো ডিজাইন কিংবা পোস্টার ডিজাইন কিংবা অন্য কোনো সেক্টর খুব ভালোভাবে শেখা উচিৎ।
অনলাইন মার্কেটপ্লেস যেমন ফাইভার, আপওয়ার্ক ইত্যাদিতে গ্রাফিক ডিজাইনারদের প্রচুর চাহিদা রয়েছে। ৯৯ ডিজাইনস নামে একটি সাইট আছে যেখানে গ্রাফিক ডিজাইনাররা প্রতিযোগিতাইয় নির্বাচিত হলে বেশ ভালো অঙ্কের পেমেন্ট পেয়ে থাকেন।
এছাড়াও গ্রাফিক টেমপ্লেট বানিয়ে ফ্রিপিক, এনভ্যাটো ইত্যাদি সাইটে বিক্রি করা যায়।
টি-শার্ট ডিজাইনাররা বিভিন্ন প্ল্যাটফরমে যেমন টিস্প্রিং, রেডবাবল ইত্যাদিতে টি-শার্টের ডিজাইন বিক্রি করে টাকা আয় করতে পারেন। টি-শার্ট ডিজাইন একটি প্যাসিভ পদ্ধতি, অর্থাৎ টি-শার্টের ডিজাইন একবার করে রাখলে যতবার বিক্রি হবে ততবার টাকা পাবেন, আলাদা করে সময় দিতে হবে না।
গ্রাফিক ডিজাইনে দক্ষ হয়ে গেলে আপনি নিজের কোর্স চালু করতে পারবেন, অথবা ইউটিউব চ্যানেল চালু করে টাকা আয় করতে পারেন।
ভালো ডিজাইনের পাশাপাশি সৃজনশীল, মৌলিক চিন্তা করতে পারা গ্রাফিক ডিজাইনে সফলতার অন্যতম চাবিকাঠি।
৫. অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে অনলাইনে আয় করার সহজ উপায়
অনলাইনে টাকা আয়ের যতগুলো প্যাসিভ পদ্ধতি আছে তার অন্যতম জনপ্রিয় এবং অনলাইনে আয় করার সহজ উপায়গুলোর একটি অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং।
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং বলতে সংক্ষেপে যা বোঝায় তা হচ্ছে- মনে করুন, আপনার কোনো বন্ধুর একটি পণ্য আছে, আর আপনার একটি ওয়েবসাইট আছে যেখানে বেশ কিছু সংখ্যক ভিজিটর বা পাঠক আছে।
আপনি আপনার ওয়েবসাইটে আপনার বন্ধুর পণ্যটি কেনার জন্য একটি রেফারেল লিংক দিয়ে দিলেন। সেখান থেকে কেউ যদি পণ্যটি ক্রয় করে তাহলে বিক্রির লভ্যাংশ থেকে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ আপনি পাবেন।
এভাবেই মূলত অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং কাজ করে। অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিংয়ের মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং প্রোগ্রাম হলো অ্যামাজন অ্যাসোসিয়েটস। অ্যামাজন অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করার জন্য আপনার একটি ওয়েবসাইট বা একটি ইউটিউব চ্যানেল থাকা দরকার।
বাংলাদেশে সাধারণত ওয়েবসাইটের মাধ্যমে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিংটাই বেশি জনপ্রিয়। ধরে নিই, আপনার একটি একটি ওয়েবসাইট তৈরি করা হয়ে গেছে। ওয়েবসাইট তৈরির ক্ষেত্রে একটি নির্দিষ্ট টপিক বা ‘নিশ’ মাথায় রেখে তৈরি করলেন। ধরুন আপনি ওয়েবসাইটটিকে ‘টেক’ নিশে তৈরি করলেন।
এবার ধরুন অ্যামাজনে বিক্রি হয় এমন একটি মোবাইল ফোন সম্পর্কে আপনি আপনার ওয়েবসাইটে লিখলেন বা রিভিউ করলেন।
লেখার পরে সেখানে ফোনটি কেনার একটি অ্যাফিলিয়েট লিংক দিয়ে দিলেন। এখন আপনার সাইট ভিজিট করে যদি কেউ ওই লিংক থেকে ফোনটি কেনে তাহলে আপনি ফোনটির দামের একটি নির্দিষ্ট শতাংশ কমিশন পাবেন।
এই কমিশনের পরিমাণ একেকটি পণ্যের জন্য কয়েক সেন্ট থেকে শুরু করে কয়েকশো ডলার পর্যন্ত হতে পারে। আপনার আয়ের পরিমাণ নির্ভর করছে আপনার সাইটে ভিজিটর কেমন, সিটিআর কেমন, এবং পণ্যগুলোর দাম ও কমিশন রেট কেমন- ইত্যাদির ওপর।
সাইটে ভিজিটর বাড়ানোর জন্য চমৎকার কনটেন্টের বিকল্প নেই। সাইটের লেখাগুলো এনগেজিং, নির্ভুল, ধারাবাহিক ও তথ্যবহুল হওয়া জরুরি। একটি ভালো লেখা পড়েই কেবলমাত্র একজন গ্রাহক একটি পণ্য কিনতে উদ্বুদ্ধ হবে।
শুধু অ্যামাজনই নয়, আরও বিভিন্ন সাইট যেমন- ওয়ালমার্ট, রাকুটেন, ব্লুহোস্ট, ক্লিকব্যাংক, সিজে অ্যাফিলিয়েট ইত্যাদি সাইট বেশ ভালো অ্যাফিলিয়েট প্রোগ্রাম অফার করে থাকে।
বাংলাদেশে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং শেখার জন্য ইউটিউবার খালিদ ফারহান বা নাসির উদ্দিন শামীমের কোর্সগুলো ব্যাপক জনপ্রিয়। এছাড়াও বিভিন্ন কোর্স আছে যারা অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং শিখিয়ে থাকে।
কিন্তু শুরুর দিকে অধিকাংশের কাছেই কোর্স কেনার মতো যথেষ্ট টাকা থাকে না। সেক্ষেত্রে চাইলে অনলাইনে অ্যাভেইলেবল ফ্রি রিসোর্সগুলো দিয়েও শুরু করতে পারেন। ইউটিউবে “Income School” অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিংয়ের ওপর বেশ কার্যকরী ভিডিও তৈরি করে থাকে।
৬. ওয়েব ডেভেলপমেন্ট করে অনলাইনে ইনকাম করার উপায়
ওয়েব ডেভেলপমেন্ট বলতে ওয়েবসাইট তৈরি করা, তৈরি করা এবং রক্ষণাবেক্ষণ করাকে বোঝায়। ওয়েব ডিজাইন, ওয়েব পাবলিশিং, ওয়েব প্রোগ্রামিং এবং ডাটাবেস ম্যানেজমেন্টের কাজগুলো ওয়েব ডেভেলপমেন্টের মধ্যে পড়ে।
Web Development এর মাধ্যমে এমন অ্যাপ্লিকেশন বা প্রোগ্রাম তৈরি করা হয় যা ইন্টারনেট বা ওয়েবসাইটগুলোতে কাজ করে।
এই লেখাটি আপনি যে ওয়েবসাইটে পড়তেছেন সেই সাইটটিও একজন ওয়েব ডেভেলপারের তৈরি। ওয়েব ডেভেলপমেন্ট মূলত দুইটি ভাগে বিভক্ত। ফ্রন্টএন্ড এবং ব্যাকএন্ড। ফ্রন্টএন্ড হচ্ছে ক্লায়েন্ট সাইড। অর্থাৎ শুধু সাইটের ভিজিটররা যে অংশটি দেখতে পায় সেটিই হচ্ছে ফ্রন্টএন্ড।
ফ্রন্টএন্ডের জন্য এইচটিএমএল, সিএসএস, জাভাস্ক্রিপ্ট, বুটস্ট্র্যাপ, জেকুয়েরি, রিয়্যাক্ট.জেএস- ইত্যাদি শেখা দরকার। ব্যাকএন্ড হচ্ছে ‘সার্ভার সাইড’। ওয়েবসাইটের এই অংশ ব্যবহারকারীরা দেখতে এবং ইন্টারঅ্যাক্ট করতে পারে না।
এটি কেবল সফ্টওয়্যারের অংশ যা ব্যবহারকারীদের সাথে সরাসরি ইন্টারঅ্যাকশনে আসে না। এটি ডাটা সংরক্ষণ এবং ব্যবস্থাপনা করতে ব্যবহৃত হয়। ব্যাকএন্ডের জন্য পিএইচপি, জাভা, পাইথন, রুবি ইত্যাদি শেখা দরকার।
বর্তমানে প্রায় সবকিছু অনলাইননির্ভর হওয়াতে ওয়েব ডেভেলপমেন্টের চাহিদাও বেড়েছে। ফ্রিল্যান্স সাইটগুলোতে গেলে দেখা যায়, বেশ উচ্চ সম্মানী আছে এই সেক্টরে। একজন ওয়েব ডেভেলপার চাইলে অনলাইনেই ফ্রিল্যান্স কাজ বা কোনো প্রতিষ্ঠানে স্থায়ী স্টাফ হিসেবে চাকুরি করতে পারেন।
ওয়েব ডেভেলপমেন্ট শেখার উপায়
ওয়েব ডেভেলপমেন্ট শেখার জন্য বাংলাদেশে ঝংকার মাহবুবের “প্রোগ্রামিং হিরো” কোর্সটি বেশ জনপ্রিয়। এছাড়াও প্রচুর ফ্রি রিসোর্স আছে অনলাইনে। ইউটিউব বা গুগলে সার্চ করলেই পাওয়া যাবে অসংখ্য টিউটোরিয়াল।
৭. ভিডিও এডিটিং করে অনলাইনে টাকা ইনকাম করার সহজ উপায় বাংলাদেশে
করোনার প্রকোপে ইউটিউবে ঝুঁকছে প্রচুর মানুষ। ইউটিউব থেকে শুরু করে নেটফ্লিক্স, ফেসবুক, টিকটকসহ বিভিন্ন ভিডিও ভিত্তিক প্ল্যাটফরমগুলোর জনপ্রিয়তা বেড়েছে। লেখাপড়া, বিনোদন, সবকিছুতেই ভিডিওর ওপর নির্ভরশীলতা বেড়েছে।
কিছুদিন আগেও ফেসবুকে নিউজফিডের বিজ্ঞাপনে ছবি দেওয়া হতো, এখন সেসব বিজ্ঞাপনে ভিডিও ব্যবহার করা হয়। তাহলে বুঝতেই পারছেন, ভিডিও মার্কেটের পরিস্থিতি কেমন।
এমন পরিস্থিতিতে ভালো মানের ভিডিওর গুরুত্বটা সহজেই অনুমেয়। ভিডিও এডিটিং ভিডিওর একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।
ভিডিও এডিটিং করার জন্য প্রয়োজনীয় সফটওয়ার সমূহ
Video Editing এর জন্য ‘অ্যাডোবি প্রিমিয়ার প্রো’, ‘অ্যাডোবি আফটারইফেক্টস’, ‘ডা ভিঞ্চি রিজলভ’, ‘ফাইনাল কাট প্রো’, ‘লাইটওয়ার্কস’, ‘ফিল্মোরা’ ইত্যাদি সফটওয়্যার বেশ জনপ্রিয়।
ভিডিও এডিটিং করে টাকা আয় শুরু করার জন্য এগুলোর মধ্য থেকে যেকোনো একটি সফটওয়্যারে দক্ষ হলেই শুরু করা সম্ভব। আপওয়ার্ক, ফাইভার- ইত্যাদি প্ল্যাটফরমসহ আরো বিভিন্ন প্ল্যাটফরম আছে যারা শুধু ভিডিও এডিটরদেরই সুযোগ দিয়ে থাকে। এছাড়াও কেউ চাইলে কোনো প্রতিষ্ঠানের নিয়মিত স্টাফ হিসেবে অনলাইনেই স্থায়ী জব করতে পারে।
একজন ভিডিও এডিটর মার্কেটপ্লেসে কাজ করা ছাড়াও বিভিন্ন পদ্ধতিতে আয় করতে পারেন। যেমন- এডিটিং শেখানোর জন্য ইউটিউব চ্যানেল চালু করা, কোর্স চালু করা, বিভিন্ন স্বল্পমেয়াদী কাজে যুক্ত হওয়া- ইত্যাদি।
ফ্রিল্যান্সিং সাইটগুলোতে ভিডিও এডিটরদের ব্যাপক চাহিদা দেখা যায়। এই কাজের সম্মানীও বেশ ভালো।
একটা বিষয় মাথায় রাখা দরকার যে, ভিডিও এডিটিংয়ের ক্ষেত্রে একটু ভালো কনফিগারেশনের কম্পিউটার বা ল্যাপটপ দরকার। লো কনফিগারেশনের পিসি বা ল্যাপটপে ভিডিও এডিটিংয়ের সফটওয়্যারগুলো ভালোভাবে চালানো কষ্টসাধ্য হয়ে যায়।
ভিডিও এডিটিং শেখার জন্য ইউটিউবে অনেক ফ্রি কোর্স আছে। এছাড়াও, ইউডেমি বা স্কিলশেয়ারেও অনেক প্রিমিয়াম কোর্স পাওয়া যায়। ধৈর্য, অধ্যবসায় ও সৃজনশীলতা থাকলে এই সেক্টরে সফল হওয়া সম্ভব।
৮. ডিজিটাল মার্কেটিং করে অনলাইনে ইনকাম করার উপায়
ব্যবসা-বাণিজ্যের মূল কেন্দ্র অনলাইন হয়ে যাওয়ায় অনলাইনে প্রচারণাও বেড়েছে। ডিজিটাল মার্কেটিং বলতে মূলত বোঝায় ডিজিটাল মাধ্যমে কোনো পণ্য বা সেবার প্রচারণা ও বিপণন।
ডিজিটাল মার্কেটিং এর বিভিন্ন শাখা আছে। যেমন- সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন বা এসইও, সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং, ইমেইল মার্কেটিং, সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজমেন্ট, ফেসবুক মার্কেটিং, কনটেন্ট মার্কেটিং, অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং, ওয়েব অ্যানালিটিক্স ইত্যাদি।
এসইও মূলত কনটেন্ট বা প্রোডাক্টকে সার্চ ইঞ্জিনে র্যাংক করা নিয়ে আলোচনা করে। সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং হচ্ছে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে পণ্য বা সেবার প্রচার। অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং কি তা ইতিমধ্যেই জেনে গিয়েছি আমরা।
একজন ডিজিটাল মার্কেটার হিসেবে আপনি নিজস্ব ডিজিটাল মার্কেটিং এজেন্সি থেকে সেবা বিক্রি করতে পারেন কিংবা ফ্রিল্যান্স মার্কেটপ্লেসগুলোতে কাজ করতে পারে। একজন এসইও এক্সপার্ট প্রতি ঘণ্টায় গড়ে ৫০-১৫০ ডলার আয় করে থাকেন।
একজন সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজার মূলত একটি প্রতিষ্ঠানের অনলাইন উপস্থিতি তথা বিভিন্ন অনলাইন প্রোফাইল দেখভাল করে থাকেন। এছাড়াও নিজস্ব অনলাইন পণ্য যেমন ইবুক, কোর্স- ইত্যাদি বিক্রয় করেও একজন ডিজিটাল মার্কেটার অর্থ উপার্জন করতে পারেন।
ডিজিটাল মার্কেটিং শেখার জন্য বাংলাদেশে খালিদ ফারহানের কোর্স, অনলাইন লার্নিং প্ল্যাটফর্ম বহুব্রীহি ও টেন মিনিট স্কুলের কোর্সগুলো বেশ জনপ্রিয়।
এছাড়াও ইউটিউবে বিভিন্ন চ্যানেল আছে যারা ফ্রি ডিজিটাল মার্কেটিং শিখিয়ে থাকে।
৯. পণ্য বিক্রি করে অনলাইনে টাকা আয় করার সহজ উপায় বাংলাদেশে
অনলাইনে আয় করার জন্য সবচেয়ে পুরনো পদ্ধতি হচ্ছে অনলাইনে বিভিন্ন পণ্য বিক্রি। যেকোনো পণ্য যেমন- খাদ্য-সামগ্রী, জামাকাপড়, টিশার্ট, বই, স্টেশনারি, গয়না, কসমেটিকস, গ্যাজেটস- ইত্যাদি পাইকারি দরে কিনে বা নিজেই উৎপাদন করে বিক্রয় করতে পারেন।
প্রাথমিকভাবে একটি ফেসবুক পেজ বা গ্রুপ থেকেই শুরু করতে পারেন আপনার অনলাইন বিজনেস। প্রথমে সিদ্ধান্ত নিন কী পণ্য বিক্রি করতে চাচ্ছেন। এরপর সেই পণ্যের ধরন অনুযায়ী একটি সুন্দর ও ইউনিক নাম নির্বাচন করুন। সেই নামে ফেসবুক পেজ ও গ্রুপ খুলুন এবং আপনার পণ্যের বিজ্ঞাপন দিন।
বর্তমানে ফেসবুক মার্কেটপ্লেসেও পণ্য বিক্রয় করা যায়। ফেসবুকে বিজনেস করতে হলে সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং তথা ফেসবুক মার্কেটিং সম্পর্কে চলনসই জ্ঞান থাকা আবশ্যক।
ভালো ফলাফলের জন্য ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করে পেজ বুস্ট করতে পারেন। কেউ চাইলে ফেসবুকের পরিবর্তে ইনস্টাগ্রামকেও অনলাইন বিজনেসের একটি ভালো মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন। আপনার পণ্য ও টার্গেটেড কাস্টমার গ্রুপ বিবেচনা করে মাধ্যম নির্বাচন করুন।
ব্যবসা বৃদ্ধি পেলে ধীরে ধীরে আপনি নিজস্ব ওয়েবসাইট খুলে থেকে পণ্য বিক্রয় করতে পারবেন। সেক্ষেত্রে বাড়তি কিছু সুবিধা পাবেন।
১০. কোর্স বিক্রি করে অনলাইনে ইনকাম করার উপায় ২০২৩
অনলাইন লার্নিং অনেক কম সময়সাপেক্ষ, বেশি কার্যকরী, যে যার ইচ্ছামত সময়ে, ইচ্ছামত জায়গায় অনলাইনে শিক্ষা গ্রহণ করতে পারেন। এজন্য গত বেশ কয়েক বছর ধরেই অনলাইনে শিক্ষা গ্রহণের প্রবণতা বাড়ছে মানুষের মধ্যে। করোনার ঘরবন্দী সময়ে অনেকেই অনলাইনে নতুন নতুন স্কিল শিখে নিয়েছেন, এর মধ্যে অনেকেই টাকা আয় করেছেন এই অনলাইনে শেখা স্কিল থেকে।
অনলাইনে প্রফেশনাল স্কিল ডেভেলপমেন্টের বড় একটি বড় জায়গা হচ্ছে প্রিমিয়াম কোর্স। কোর্স বিক্রির বিষয়টি বাংলাদেশে খুব পুরনো না হলেও বহির্বিশ্বে এর প্রচলন অনেক আগে থেকেই ছিল।
আপনার যদি কোনো কিছুতে এক্সপার্টাইজ বা দক্ষতা থাকে এবং কাউকে কিছু বলে বোঝাতে পারেন তাহলে ওই বিষয়ের ওপর কোর্স বানিয়ে অনলাইনে বিক্রি করতে পারেন। কোর্স বানানোর জন্য কয়েকটি বিষয় মাথায় রাখা দরকার।
প্রথমত, আপনার কোনো বিষয়ে ভালো দক্ষতা ও জ্ঞান থাকতে হবে। দ্বিতীয়ত, আপনার বোঝানোর ক্ষমতা ভালো হতে হবে। তৃতীয়ত, ক্যামেরার সামনে আপনার উপস্থাপনার দক্ষতা ভালো হতে হবে। এরপর ভালোভাবে নির্দিষ্ট বিষয়ের ওপর নির্দিষ্ট আউটলাইন অনুযায়ী একটি কোর্স রেকর্ড করে অনলাইনে কোনো প্ল্যাটফরমে উন্মুক্ত করতে হবে।
একবার কোর্স তৈরি করা হয়ে গেলে যতবার কেউ ওই কোর্স কিনবে ততবারই আপনি টাকা পাবেন। যেখানে প্রত্যক্ষভাবে আর আপনাকে সময় দিতে হচ্ছে না। মানে কোর্স বিক্রিও প্যাসিভ ইনকামের দারুণ একটি পদ্ধতি।
বহুব্রীহি, টেন মিনিট স্কুল সহ বিভিন্ন অনলাইন লার্নিং প্ল্যাটফরম দিনদিন বাংলাদেশে জনপ্রিয় হচ্ছে। কোর্সের জনপ্রিয়তাও দিনদিন বাড়বে। তাই এ কথা বলাই যায় যে, কোর্স তৈরি করে বিক্রি করা ভবিষ্যতে একটি দারুণ জনপ্রিয় প্যাসিভ ইনকাম সোর্স হতে যাচ্ছে।
শেষকথা : অনলাইনে টাকা ইনকাম করার সহজ উপায় বাংলাদেশে
অনলাইনে টাকা আয় করার সহজ উপায় যে নেই তা নয়, তবে অবশ্যই সঠিক পদ্ধতি খুঁজে বের করতে হবে। অনলাইন কিংবা অফলাইন; ফেসবুক পেজ-গ্রুপ থেকে শুরু করে রাস্তাঘাটে বা দেওয়ালে-দেওয়ালে নানা চটকদার বিজ্ঞাপন দেখা যায়। তিরিশ দিনেই অনলাইনে ইনকাম শুরু করুন, মাসে লাখ লাখ টাকা আয় করুন! ইনকাম গ্যারান্টি, ইত্যাদি, ইত্যাদি।
পাড়ার মোড়ে মোড়ে ব্যাঙের ছাতার মতো গজিয়ে ওঠা এসব প্রতিষ্ঠানের বেশিরভাগই প্রতারক। বিজ্ঞাপন দেখলে যে কারো মনে হতেই পারে যে অনলাইনে আয় বুঝি ছেলের হাতের মোয়া! এসব বিজ্ঞাপন অনেক ক্ষেত্রেই একজন নতুন অনলাইনে আয় করতে আগ্রহী ব্যক্তিকে ভুল দিকে প্রবাহিত করে।
ফলে অনলাইনে আয় করতে না পেরে হতাশা বাড়ে। অনলাইনে আয়ের প্রতি আস্থা উঠে যায়। তাই বলছি, এসব চটকদার বিজ্ঞাপনে কান না দিয়ে আপনার হাতে থাকা স্মার্টফোনটির যথাযথ ব্যবহার করুন। গুগল- ইউটিউবে সময় দিন, আপনি যে স্কিলটি অর্জনে আগ্রহী বা যে সেক্টরে কাজ করতে আগ্রহী সেটা নিয়ে ঘাঁটুন। অনেক ফ্রি রিসোর্স পাবেন। ভালো-মন্দ জানুন। চেষ্টা করুন, লেগে থাকুন। আজ হোক, কাল হোক; সফলতা আসবেই!
প্রাসঙ্গিক লেখাসমূহ-